আরও একবার অনেকটুকু লড়াই করলো যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তাদের ফিরতে হলো এবার কাছে গিয়ে।
শুরুতে কুইন্টন ডি ককের ঝড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা পায় বড় সংগ্রহ। ওই রান তাড়া করতে নেমে বেশ অনেক দূর গেলেও শেষ অবধি ফিরতে হয়েছে হতাশা নিয়ে।
বুধবার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ১৮ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শুরুতে ব্যাট করে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করে প্রোটিয়ারা। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানের বেশি করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পুরো টুর্নামেন্টের মতো এদিনও শুরুতে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দলীয় সংগ্রহ যখন ১৬, তখন রেজা হেনরিকস শিকার হন সৌরভ নেত্রভালকারের। ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলা শট ব্যাটের আগায় লাগলে মিড অনে দাঁড়িয়ে তার ক্যাচ নেন কোরি অ্যান্ডারসন। ১১ বলে ১১ রান করে আউট হন হেনরিকস।
পরের ওভারেই জাশদ্বীপ সিংয়ের বলে রীতিমতো ঝড় তোলেন কুইন্টন ডি কক। তিনটি ছক্কা ও দুইটি চার হাঁকান তিনি। ওই ওভারে সবমিলিয়ে আসে ২৮ রান। পাওয়ার প্লেতে এই টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সর্বোচ্চ ৬৪ রান আসে। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে এটি তাদের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান।
হেনরিকসের বিদায়ের পর আরেক প্রান্তে ডি ককের সঙ্গে যোগ দেন এইডেন মার্করাম। ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান হয়ে যায় ১০১। ডি কক ও মার্করামের ৬০ বলে ১১০ রানের জুটি ভাঙেন হারম্রিত সিং। তার করা ফুল টসে ঠিকঠাক টাইমিং করতে পারেননি ডি কক। কাউ কর্নারে দাঁড়িয়ে তার ক্যাচ নেন শায়ান জাহাঙ্গীর।
বড় জুটি ভাঙার পরের বলেই আরও এক উইকেট পেয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। এবার হারম্রিত সিংয়ের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দেন ডেভিড মিলার। মার্করামকেও এরপর দ্রুতই ফেরাতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩২ বলে ৪৬ রান করে সৌরভ নেত্রভালকারের বলে আলি খানের নেওয়া দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরতে হয় তাকে।
তবে শেষদিকে হেনরিখ ক্লাসেন ও ক্রিস্তিয়ান স্টাবস দলকে টেনে নেন। দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়েও দুইশ করতে পারেনি। ২২ বলে ৩৬ রান করে ক্লাসেন ও ১৬ বলে ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন স্টাবস।
রান তাড়ায় নেমে ভালো শুরু পায় যুক্তরাষ্ট্রও। প্রথম তিন ওভারে তারা তোলে ২৮ রান। চতুর্থ ওভারে গিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন কাগিসো রাবাদা। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৪ বলে ২৪ রান করা এই ব্যাটার ক্যাচ তুলে দেন মিড অফে দাঁড়ানো হেনরিখ ক্লাসেনের হাতে।
পাওয়ার প্লের ভেতরই আরও একটি উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র, এবারও বোলার রাবাদা। ৬ বলে ৮ রান করে ফ্লিক করতে যান নিতিশ কুমার। কিন্তু তিনি ক্যাচ দেন স্টাবসের হাতে। অধিনায়ক অ্যারন জোন্সও এদিন কিছু করতে পারেননি। ৫ বলে কোনো রান না করেই কেশভ মহারাজের বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
মাঝে কোরি অ্যান্ডারসন ১২ বলে ১২ ও শায়ান জাহাঙ্গীর ৯ বলে ৩ রান করে আউট হন। এরপরই রানের গতি বদলে যায় আবারও। ওভারপ্রতি ১০ এর ওপর রান আনছিলেন আন্দ্রেস গৌওস ও হারম্রিত সিং। নিয়ন্ত্রণে থাকা রান রেট আরও কাছে চলে আসে তাবরেজ শামসির করা ১৮তম ওভারে ২২ রান করলে।
এই ওভারের আগে ১৮ বলে ৫০ রান দরকার ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। পরে সেটি হয়ে যায় ১২ বলে ২৮। কিন্তু ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই হারম্রিত সিংকে ফেরান তিনি। ২২ বলে দুটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৩৮ রান করে মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ দেন স্টাবসের হাতে।
৪৩ বলে ৯১ রানের জুটি ভাঙার পর অনেকটাই শেষ হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের আশা। ১৯তম ওভারে স্রেফ ২ রান দিয়ে সেটি আরও শেষ করে দেন রাবাদা। ওপেনার গৌওস ৪৭ বলে ৮০ রান করে অপরাজিত থাকলেও মাঠ ছাড়তে হয় হারের হতাশা নিয়ে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।