ভিডিও

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে চরাঞ্চলে পতিত জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষে ব্যস্ত কৃষক

প্রকাশিত: অক্টোবর ০২, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আপডেট: অক্টোবর ০২, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের পতিত জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। গত বছর ভালো লাভ পেয়ে এবছর দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে মিষ্টি কুমড়া চাষে নেমেছেন তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। চরের পতিত জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষে অনেকেরই ভাগ্য ফিরেছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা ও বাঙালি নদীর বিশালাকার চারণভূমি আদিকাল থেকেই পতিত থাকতো। অপেক্ষাকৃত বালুমাটির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এ মাটিতে কোনও ফসল হয় না। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই কৃষকরা এসব পতিত জমিতে নানা ধরনের ফসল চাষ করছেন, যা বালুমাটিতে শ্যালোমেশিন বসিয়ে প্লাস্টিকের পাইপের সাহায্যে পানি দিয়ে চাষাবাদ করা হয়।

এ পদ্ধতিতে উঁচু-নিচু জমিতেও পানি দেওয়া যায়। সাধারণত এ পদ্ধতিতে যেসব ফসল চাষ করা হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি ফসল হলো মিষ্টিকুমড়া। গত বছর কৃষকরা মিষ্টিকুমড়া চাষ করে বিঘাপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে লাভ পেয়েছেন। তাই এ বছর তারা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে চরের পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত ২০ থেকে ৩০ দিন আগে থেকে কৃষকরা জমিতে মিষ্টিকুমড়ার বীজ বপণ করতে শুরু করেন। কৃষকদের রোপণ করা মিষ্টিকুমড়ার গাছ এখন বেশ বড় হয়েছে।

আর কয়েকদিন পরই মিষ্টিকুমড়া ধরতে শুরু করবে। কৃষকরা এখন মিষ্টিকুমড়ার জমিতে আগাছা পরিষ্কার করতে, শ্যালোমেশিন দিয়ে পানি দিতে, রোগাক্রান্ত গাছে কীটনাশক প্রয়োগ এবং সার প্রয়োগ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তারা সাধারণত বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের মিষ্টিকুমড়া গত কয়েক বছর ধরেই চাষ করছেন এবং লাভবান হচ্ছেন। সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে হাইব্রিড জাতের মিষ্টিকুমড়া জমিতে বপণ করা হয়। বপণ করার ৪০ থেকে ৫০ দিন পর গাছে ফুল আসে। উপজেলার পৌর এলাকার হিন্দুকান্দি গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম দৈনিক করতোয়া‘কে জানান, উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিজতিতপরল চরে যমুনা নদীতীরে তিনি এ বছর ১০০ বিঘা জমিতে মিষ্টিকুমড়ার চাষ করেছেন।

গাছগুলো এখন বেশ বড় হয়ে মাটিতে বিছিয়ে পড়া শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পরই গাছে মিষ্টিকুমড়া ধরতে শুরু করবে বলে আশা করছেন আমিরুল ইসলাম। জমিতে পানি দেওয়ার জন্য উঁচুনিচু জমিতে তিনি আইল তোলার জন্য ৩৫ জন শ্রমিক নিয়েছেন।

গত বছর তিনি ৭০ বিঘা জমিতে মিষ্টিকুমড়ার চাষ করেছিলেন। ৭০ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষে তার খরচ হয়েছিল ১৪ লাখ টাকা। গত বছর তার মোট মিষ্টিকুমড়া বিক্রি হয়েছিল ২৭ লাখ টাকা। তাই গত বছর তার ১৩ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যদি সার এবং কীটনাশক সহায়তা পাওয়া যেতো তাহলে খুবই ভালো হতো।

সারিয়াকান্দি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কুদরত আলী জানান, গত বছর হাইব্রিড জাতের মিষ্টিকুমড়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯০ হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল দুই হাজার মেট্রিকটন।

এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০৫ হেক্টর। এ পর্যন্ত ৩৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টিকুমড়ার চাষ হয়েছে। সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম দৈনিক করতোয়া‘কে বলেন, চরাঞ্চলের পতিত জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী গত কয়েক বছর ধরেই কৃষকরা মিষ্টিকুমড়ার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।

প্রতি বিঘা জমিতে ধানচাষ করে যে আয় হয় তার চেয়ে মিষ্টিকুমড়া চাষ করে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়। তাই কৃষকরা এ বছর মিষ্টিকুমড়া চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়া ভালো থাকলে এ বছর এ উপজেলায় মিষ্টিকুমড়ার বাম্পার ফলন হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS