ভিডিও

পারিবারিক বিরোধে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করায় ৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৪, ১১:০১ রাত
আপডেট: জুন ২৩, ২০২৪, ১১:০১ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি : বর্ষার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ বন্ধ করে দেওয়ায় গত সাত দিন   থেকে জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের ৫ গ্রামের প্রায় চার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

গতকাল শনিবার সকাল দশটায় সরেজমিনে জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের ধারকী আকন্দপাড়া, বড়াইল পাড়া,ফকির পাড়া, মন্ডল পাড়া ও প্রধান পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে গ্রামগুলোর ইট বিছানো সংযোগ সড়কগুলো পানিতে ডুবে আছে। খড়ের পালা, বাড়ি-ঘরের আঙিনা এবং সীমানা প্রাচীরের নীচ পর্যন্ত ছুঁই ছুঁই করছে বর্ষার পানি।

বড়াইল পাড়া জামে মসজিদে যাওয়ার রাস্তাও হাঁটু পানির নীচে। নর্দমার পানির সাথে বর্ষার পানি মিশে নোংড়া হয়ে পড়েছে। কাজের চাপে সেই নোংড়া পানি ভেঙ্গে গ্রামের মানুষ যাতায়াত করলেও নারী এবং শিশুরা চলাচল করতে পারছে না। বাড়ির আঙিনায় পানি ওঠায় অনেকেই রান্নাও করতে পারছেন না।

পানিবন্দি ভুক্তভোগী আকন্দপাড়া গ্রামের মোজাহার আকন্দ বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে আসছি বর্ষা মৌসুমে পানি নির্দিষ্ট পথে ড্রেনের মাধ্যমে অপসারিত হয়। কিন্তু গত বছর তিনেক আগে এ গ্রামের শাহ আলম মন্ডল ওরফে আলম নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেন। সেই থেকে পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়েছি আমরা।

প্রতিবাদ করতে গেলেই আলম মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখায়। সমাধানের জন্য ইতোপূর্বে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও আলমের কারণেই তা ভেস্তে গেছে। ওই গ্রামের মাছুদ আকন্দ বলেন অনেক আগে থেকেই এ গ্রামগুলোর পানি ধারকী গ্রামের কয়েক শরীকের মালিকানাধীন পরিত্যক্ত দুটি পুকুর দিয়ে ড্রেনের মাধ্যমে নিষ্কাশন হয়ে আসছিল।

প্রভাবশালী শাহ আলম মন্ডল পুকুর দুটি দখলে নিয়ে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেন। পরে উপজেলা পরিষদ হতে গ্রামবাসীর স্বার্থে ড্রেন পাকা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলেও শাহ আলম সেই ড্রেনও ভেঙ্গে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে দেন। ধারকী বড়াইল পাড়া গ্রামের মাহমুদুল হোসেন বলেন, আমরা গ্রামের অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবী ও কৃষক।

রাস্তাগুলো পানি বন্দি থাকায় আমরা কৃষি পণ্য বিক্রি করতে পারছি না। আবার অনেক অটোরিক্সা ও ভ্যান চালক গ্রামবাসী অটো বা ভ্যান নিয়ে গ্রামে ঢুকতেও পারছেন না। আমরা খুব কষ্টে আছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেও কোন সমাধান হয়নি। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা সমাধানের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে শুধু ভোট নিয়েছেন।

এখন তারা পাত্তাই দিচ্ছেন না। বড়াইল পাড়া গ্রামের তাজেল ইসলাম বলেন পানিবন্দি হওয়ায় গ্রামের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। এমনকি রাস্তা ডুবে থাকায় মসজিদেও তারা ঠিকমত যেতে পারছেন না।  
গ্রামবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে অভিযুক্ত ধারকী গ্রামের শাহ আলম মন্ডল প্রতিবেদকের সাথে অশোভন আচরণ করেন।

তিনি বলেন আমার জায়গা দিয়ে আমি পানি যেতে দিব না। এ সময় উপজেলা পরিষদের নির্মাণ করা ড্রেনের ভেঙ্গে ফেলা অংশের ছবি তুলতে গেলে তিনি বাধা দেন। জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের গতিপথের প্রবাহ বন্ধ করা কারো কোন অধিকার নেই।

শীঘ্রই এটি উচ্ছেদ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্থরা ফৌজদারী কার্যবিধির ১৩৩ ধারায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দিলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS