ভিডিও

বগুড়ার করতোয়া নদী উন্নয়নে সাড়ে ২৪শ’ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব

মেয়াদ ৪ বছর

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৪, ১০:০৭ রাত
আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২৪, ০১:১০ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

রাহাত রিটু : সাড়ে ২৪শ’ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নতুন করে করতোয়া নদী উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চার বছর মেয়াদী এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে দূষণ-দখলে মৃত প্রায় করতোয়া নদী নাব্য ফিরে পাবে।

এর আগে প্রায় ৬ বছর আগে ২০১৮ সালে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যায় ধরে করতোয়া নদী উন্নয়ন প্রকল্প দাখিল করা হয়েছিল। তৎকালীন সরকার এই প্রকল্প অনুমোদন না করায় এবার কাটছাঁট করে নতুনভাবে প্রকল্পটি দাখিল করা হলো।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করতোয়া, ইছামতি, গজারিয়া ও নাগর নদীর ৩৫৫ দশমিক ১০ কিলোমিটার করতোয়া নদীসিস্টেম পুনঃখননের মাধ্যমে গাইবান্ধা বগুড়া জেলায় প্রকল্প এলাকায় সেচ প্রদান ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ নদীসমূহের নাব্য ফিরিয়ে আনা, দখল ও দূষণ থেকে করতোয়া, ইছামতি, গজারিয়া ও নাগর নদীকে রক্ষা করা, ভূগর্ভস্থ পানির পুনর্ভরণসহ সেচ সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা, পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও দীর্ঘায়িত করে মৎস্য চাষের উন্নয়ন করা, নদীর তীরে বনায়ন করা, বগুড়া জেলার শহর অংশে করতোয়া নদীর উভয় তীরে ৩২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করা, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকরী অবদান রাখা এবং জীববৈচিত্র পরিবেশও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করার উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন রোর্ড বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক জানান, এই প্রকল্পের প্রধান প্রধান কাজগুলো হলো করতোয়া নদীর তীরে ৩১ দশমিক ৪৭০ কিলোমিটার স্লোপ প্রটেকশন কাজ। বাঙালি নদীর তীরে ১ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার ও নাগর নদীর তীরে শূন্য দশমিক ৩০৫ কিলোমিটার মোট এক দশমিক ৭৮৫ কিলোমিটার তীর প্রতিরক্ষা কাজ।

করতোয়া নদী পুনঃখনন ১০৬ কিলোমিটার, করতোয়া নদীর ১৭ কিলোমিটার মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, গজারিয়া নদী পুনঃখনন ৩৪ দশমিক ৬০০ কিলোমিটার, নাগর নদী পুনঃখনন ১১২ কিলোমিটার এবং ইছামতি নদী পুনঃখনন ৭১ কিলোমিটার।

এছাড়াও এরুলিয়া খাল সাড়ে ১৪ কিলোমিটার। মোট নদীর দৈর্ঘ্য ৩৫৫ দশমিক ১০০ কিলোমিটার খনন করা হবে। এছাড়াও করতোয়া নদীর উভয় তীরে ৩২ কিলোমিটার বাঁধ কাম ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। আবার নাগর নদী উভয় তীরে ৬৪ দশমিক ৪০০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণও করা হবে এই প্রকল্পের আওতায়। তিনি আরও জানান, সুবিল খালের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার লিংককিং ওয়ার্ক করা হবে।

একটি পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো করা ছাড়াও ৯৮টি ব্রিজের ফাউন্ডেশন ট্রিটমেন্ট, যে ২৩ কিলোমিটার ওয়ার্কওয়ে করা হবে তার সিঁড়ি, পানি নিষ্কাশন ড্রেন ছাতা বসার বেঞ্চ এবং প্রয়োজনে উচ্ছেদ রাস্তা করা হবে। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদীর নাব্য ও ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। নদী ও খালে পানি ধরে সেচ কাজে ব্যবহার করা যাবে।

এতে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন বৃদ্ধি পাবে যা জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে। নদীর ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে বন্যার তীব্রতা হ্রাস পাবে নিষ্কাশন ব্যবস্থা জোরদার হবে। মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং জীব-বৈচিত্রের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হবে। খননকৃত মাটির সাহায্যে নদী/খালের পাশে বাঁধ নির্মাণ করে গাছ রোপণ করা হবে।

তিনি বলেন, বিষয়গুলো বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। প্রায় ৭০ ভাগ লোক কৃষিজীবী। কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে যা দারিদ্রতা হ্রাসে সহায়ক হবে।

নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে জালেরমত ছড়িয়ে প্রবাহিত হচ্ছে অজস্র খাল, বিল, নদীনালা। কালের বিবর্তনেও সকল নদী/খাল উজান হতে বয়ে আসা পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অনেক নদী ও খালের অস্তিত্ব হারিয়ে যাওয়ার পথে। নদী-খাল খনন করা হলে তার স্বকীয়তা ফিরে পাবে। জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS