ভিডিও

বগুড়ায় এবার দেড় হাজার কোটি টাকার সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৪, ০৭:১৮ বিকাল
আপডেট: অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০২:৪৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

শাওন রহমান : বগুড়ায় চলতি শীতকালীন (রবি) সবজি চাষ মৌসুমে ১২২৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার বিভিন্ন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলার চাষিরা। বগুড়ায় এবছর সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলার কৃষি বিভাগ। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন সবজি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ায় গত বছর ১৩ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়। চলতি মৌসুমে সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ৩ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ মেট্রিকটন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। গত বছর জেলার উৎপাদিত সবজির গড় দাম ৩৫ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হলেও এবার ধরা তা হয়েছে ৪০ টাকা।

এতে করে উৎপাদিত সবজির বাজার মূল্য দাঁড়ায় ১২২৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। মৌসুমের শুরু ও শেষে সবজির এই দাম আরও বেশি হয় এবং অনুকূল আবহাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে জমির পরিমাণ বাড়লে বগুড়ায় উৎপাদিত সবজির বাজার মূল্য দাঁড়াবে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। এবছর সবজি চাষে বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার টাকা।

এদিকে বগুড়ার ফসলের মাঠজুড়ে কৃষকদের শীতকালীন সবজির জমির পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। যদিও মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির প্রভাব থাকায় চাষাবাদ কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। তারপরেও বেশি দাম ও অনুকূল আবহাওয়ায় জেলার চাষিরা প্রতি বছরই বাড়াচ্ছেন সবজি চাষের জমি। সেই ভোর থেকে কৃষকের মাঠে থাকা রবি শস্য মূলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, সীম, টমাটো, করলা, লাল ও পালংশাক, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ অন্যান্য ফসলের জমিতেই কাটছে তাদের সারাদিন।

জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর, সদর, গাবতলী ও শেরপুরে উপজেলায় বেশি জমিতে প্রায় সারা বছরই সবজির চাষ হয়ে থাকে। এরমধ্যে শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় সবজি চাষের পাশাপাশি বছরজুড়ে নানা জাতের চারা উৎপাদন হয়ে থাকে। সাধারণত মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য মার্চ (আশ্বিন থেকে ফাল্গুন) পর্যন্ত রবি শস্যের মৌসুম।

সদর উপজেলার শ্যামবাড়িয়া গ্রামের চাষি আব্দুল খালেক বলেন, এ মৌসুমে শীতকালীন সবজি চাষের জন্য আগেভাগেই জমি প্রস্তুত করে রেখেছিলাম, তবে বৃষ্টির কারণে সেই জমি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরেও আড়াই বিঘা জমিতে ফুলকপি ও ২০ শতাংশ জমিতে পালংশাক চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত যে আবহাওয়া তাতে ভালো ফলনের আশা করছি।

আরেক চাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবার সবমিলে সাড়ে চার বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছি। এক সময় এসব জমিতে শুধু ধান আর কলা চাষ করলেও কয়েক বছর ধরে সবজি চাষ করছি, কারণ সারা বছরই সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, ধান চাষে পরিশ্রমের তুলনায় লাভ কম, অনেক সময় লোকসানও হয়, আর সবজি চাষে লাভ অনেক বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান বলেন, সাধারণত মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য মার্চ (আশ্বিন থেকে ফাল্গুন) পর্যন্ত রবি শস্যের মৌসুম। এ বছর অক্টোবরে বৃষ্টির প্রভাব থাকায় সবজির চাষের জমি প্রস্তুত করতে বিলম্বিত হলেও বিঘ্নিত হয়নি। তিনি আরও বলেন, শীতকালীন সবজির দাম মৌসুমে শুরুতে বেশি থাকলেও ভরা মৌসুমে কিছুটা কমে যায়।

তারপরেও বগুড়ায় উৎপাদিত সবজি চাষে কৃষকদের লাভ অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক বেশি। প্রতি কেজি সবজির দাম গড়ে ৪০ টাকা ধরলে চলতি রবি মৌসুমে ১২২৫ কোটি সাড়ে ৮০ লাখ টাকার সবজি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। আর দাম বেশি হলে ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে জমির পরিমাণ বাড়লে বগুড়ায় উৎপাদিত সবজির বাজার মূল্য আরও বেশি হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS