বঞ্চিত হচ্ছেন শত শত নারী
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দির মা ফাতেমা (রা.) নারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গত ৮ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ডিডব্লিউএ ইউসেফ বাংলাদেশের সাথে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। এতে করে গ্রামীণ অবহেলিত নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
অবহেলিত নারী জনগোষ্ঠির উন্নয়নে ২০০০ সালে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার ৬ বছর পর ২০০৬ সালে কেন্দ্রটি রাজস্ব খাতের অন্তর্ভুক্তি লাভ করে। ২০১৪ সালে গ্রামীণ অবহেলিত নারীদের জন্য শুরু হয় সিএনজিচালিত থ্রি হুইলার ড্রাইভিং এবং মোটরসাইকেল মেকানিক্স প্রশিক্ষণ কোর্স।
তখন থেকেই কেন্দ্রটিতে গ্রামীণ দরিদ্র, স্বামী পরিত্যাক্তা এবং বাল্যবিয়ের শিকার নারীদের বিভিন্ন দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীরা ইউসেফ এর সহায়তায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। তিন মাসের কোর্সে মোটরসাইকেল মেকানিক, কনজিউমার ইলেক্ট্রনিক্স এবং ইলেক্ট্রিশিয়ান তিনটি ট্রেডে এখানে ৫০ জন করে গ্রামীণ নারী প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। এদের মধ্যে মোটরসাইকেল মেকানিক্সে ১০ জন, কনজিউমার ইলেক্ট্রনিক্সে ২০ জন এবং ইলেকট্রিশিয়ানে ২০ জন। প্রশিক্ষণার্থীরা এখানে ফ্রিতে থাকা-খাওয়ার সুবিধাও পান।
এখানে সাধারণত আদিবাসী নারীরাই বেশি ট্রেনিং নিয়েছেন এবং চাকরি পেয়েছেন। তারা সাধারণত রাজশাহী, নওগাঁ ও দিনাজপুর জেলা থেকে আসেন। এছাড়াও স্বামী পরিত্যাক্তা এবং বিধবা নারীরা এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিন মাসের প্রশিক্ষণকালে থাকা-খাওয়া ফ্রিসহ তারা ৯০০ টাকা ভাতা পান।
কেন্দ্রটির একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ জনবল কাঠামো ১৩ জন। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত এখানে এক হাজার ২১২ জন নারী সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। তাদের মধ্যে একহাজার নারী দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা পারভিন নাহার বলেন, এটি সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়াধীন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ডিডব্লিউএ-ইউসেপ পার্টনারশিপ প্রজেক্ট। তাদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। চুক্তিভিত্তিক প্রজেক্টটির মেয়াদ গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে।
গত বছর জুন মাসে এ বিষয়ে প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হয়েছে। এখনও কোন আদেশ পাওয়া যায়নি। আশা করা যাচ্ছে খুব শিগগিরই আমরা চুক্তিবদ্ধ হতে পারবো এবং আগামী অক্টোবরের মধ্যেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করতে পারবো।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রশাসক তৌহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি দ্রুত চালু করতে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করেছি। আশা করা যাচ্ছে খুব দ্রুত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি চালু হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।