শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকে পালাতে সহায়তা করায় বিএনপি’র এক নেতাকে বহিস্কার করা হয়েছে। ওই নেতার নাম মো. জাহিদুল ইসলাম মেম্বার। তিনি উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপি’র দপ্তর সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দলীয় নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি’র প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া বহিস্কৃত নেতার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ২৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু আওয়ামী লীগের ১৪১ জন নেতার নাম উল্লেখসহ অসংখ্য অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। উপজেলা বিএনপি’র মিছিলে সশস্ত্র হামলা ও দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়। এই মামলার অন্যতম আসামি হলেন শেরুয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তাকে ধরতে মাঠে নামে পুলিশ।
একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলেও বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। পুলিশ ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম মেম্বার।
সেইসঙ্গে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এমনকি গ্রেপ্তার নেতাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা প্রদান করেন। এরইমধ্যে পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই ঘটনাটি বিএনপি নেতাদের জানালে তাকে বহিস্কার করা হয়।
তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বহিস্কৃত জাহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম সম্পর্কে আমার মামা। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে নির্দোষ দাবি করি। এসময় পরিবারসহ বাইরের আত্মীয়-স্বজনরা পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডতা করেন। এরইমধ্যে মামা সিরাজুল ইসলাম পালিয়ে যান। তবে তিনি এসবের মধ্যে নেই বলে দাবি করেন।
জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবলু বলেন, বিগত ৫ আগস্টের পর থেকে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাতে পালাতে সহায়তা করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন তিনি। তাকে বিএনপি’র সব পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
জানতে চাইলে শেরপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, বিএনপি নেতার দায়ের করা মামলার ১০৭ নম্বর আসামি সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু বিএনপি নেতা ও তার সহযোগীরা গ্রেপ্তারকৃতকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। তাই পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।