পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া’র কাহালু উপজেলার কালাই ইউনিয়নের নলডুবি চিশ্তিয়া কালিমীয়া মাজারের বিভিন্ন মুল্যবান সামগ্রী কাউকে না জানিয়ে বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাদ জুম্মা মাজার প্রাঙ্গনে এলাকার মানুষ বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে, পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।
জানা যায়, এ মাজারে বৃটিশ শাসন আমল থেকে প্রতি বছর বাংলা ফাল্গুন মাসে ওরশ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর এটিই উপজেলার সর্ব বৃহৎ ওরশ মাহফিল।এখানে হযরত সৈয়দ খাজা মোহাম্মদ মোকারম কালিমী চিশতির কবর রয়েছে। মাজারটির অবস্থান কাহালু ও শিবগঞ্জ উপজেলা সীমান্তবর্তী এলাকায়। এছাড়া মাজার কমিটির সিংহ ভাগ সদস্য শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
কমিটির সভাপতির নাম শফিকুল ইসলাম মন্ডল। প্রতিবছর পাকিস্তানের নাগরিক পীর সৈয়দ মাসুদ কালিমী এ মাহ্ফিলে যোগ দেন। তার নির্দেশে মাজারের কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে এলাকার মানুষ জানায়। আজ শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাদ জুম্মা ৪/৫ শ’ মানুষ সমবেত হয়ে মাজার কমিটির বিরুদ্ধে মানুষের দানের বিভিন্ন সামগ্রীসহ দান বাক্স ভেঙ্গে টাকা তছরুপের অভিযোগ তুলে তারা মাজার প্রাঙ্গনে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে।
সংবাদ পেয়ে কাহালু থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আশরাফুল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং উভয় পক্ষকে আজ শনিবার সকাল ১০ টায় থানায় উপস্থিত হবার কথা বলেন। এদিকে কালাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আজাহার আলী আবু জাফর বলেন, এ মাজারের মানুষের ২৫/৩০ কেজি ওজনের ১১০টি পিতলের হাড়ি (ডেকচি).২শ’টি লোহার কুঠারসহ বেশ ক’টি লোহার কড়াই ও মাজার এলাকার অনেক গাছ কমিটি কাউকে না জানিয়ে বিক্রি করেছে।
এ ছাড়া রাতের আঁধারে কয়েক মাসের ব্যবধানে মাজারের দান বাক্স ভেঙ্গে টাকা তসরুপ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এলাকার মানুষ ফুঁসে উঠেছে। তারা অরোও বলেন এবার ওরশের তারিখ ১ মার্চ ঘোষনা করা হলেও গতকাল কমিটি ওই তারিখ স্থগিত ঘোষণা করেছে। আরও বলা হয় প্রতিবছর ওরশে তবারক হিসেবে ভাতসহ আলু ঘাটির ব্যবস্থা থাকলেও এ বারে ঘোষনা দেয়া হয়েছিল খিচুড়ির।
আর এ মাহফিলে ২০/৩০ হাজার মানুষের সমাগম হয়ে থাকে। তবে খিচুড়ির কথা শুনে এলাকার মানুষ চরম ভাবে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এদিকে গত তিনদিন ধরে মাইকে প্রচার করে গতকাল বাদ জুম্মা মাজার কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়েছিল।
তবে পুলিশ তা করতে দেয়নি। এ মাজারের বিভিন্ন সামগ্রী কাউকে না জানিয়ে বিক্রি ও টাকা তসরুপ বিষয়ে কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মন্ডলের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আজ থানায় ডাকা হয়েছে সেখানে কথা হবে।
অপরদিকে কাহালু থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আশরাফুল জানান মাজার কমিটির এক সদস্য আবুল কাশেম লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে ওরশ বানচাল ও হট্টগোল হবার করার কথা উল্লেখ রয়েছে।
তবে এলাকার মানুষ এ কমিটি পরিবর্তন করে নতুন ও একটি স্বচ্ছ কমিটি গঠনের পক্ষে দাবি জানিয়েছেন। এলাকার মানুষ আরোও জানান বছরে এ মাজারে লক্ষ লক্ষ টাকা মানুষ দান করে, কিন্তু এর হিসেব কেউ পায়না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।