রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১শয্যা থেকে ৫০শয্যায় উন্নতি করা হলেও চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবলের অভাবে সেবা নিতে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট না থাকায় সিজারসহ সকল ধরণের অপারেশন বন্ধ রয়েছে।
চিকিৎসক সংকটের কারণে যথাযথ সেবা না পেয়ে ভোগান্তির কবলে পরে বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়। ২০ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছে ১১জন। অন্যান্য পদেও জনবলের অভাব প্রকট। নানা সংকটের কারণে প্রায় দুই লাখ মানুষের চিকিৎসা সুবিধার অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন প্রান্তিক জনপদ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা তাদের কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্হিবিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৫শ’ রোগীর ভিড়ে উপ-সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
উপজেলাবাসীর সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থাপিত হয়। স্বাস্থ্য সেবার মান আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১০ সালে স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর ১৯ শয্যা বিশিষ্ট তিন তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২০১২ইং সালের মার্চ মাসে নির্মাণকৃত ভবনটি হস্তান্তর করা হলেও প্রায় এক যুগ ধরে জনবল না বাড়ায় নানা সংকটে চলছে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. ওমর ফারুক সুমন হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন এবং সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা যায়, রাণীনগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা পরিষদ স্থাপিত হওয়ার পর ১৯৮৪ সালে উপজেলা সদরের পশ্চিম বালুভরা মৌজায় ৬.২৫একর জমি সরকার ক্রয় করে প্রথমে ৩১শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা সঠিকভাবে প্রদান করার লক্ষ্যে তৎকালীন সময়ে প্রায়াত সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম এমপি’র একান্ত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নত করার লক্ষ্যে তিন তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষে ২০১২ সালে হস্তান্তর হলেও জনবল সংকটে সেবার মান বাড়াতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে মাসে প্রায় ২ হাজার রোগী অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা সেবা পান এমনটাই বলছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. কেএইচএম ইফতেখারুল।
ফলে আন্ত:বিভাগ রোগীদের দুর্ভোগ থেকেই যাচ্ছে। ওষুধ সংকটের কারণে রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে চিকিৎসা করাতে হয়। এতে গরিব রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধ কিনে খেতে কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপরেশন থিয়েটার থাকলেও শুধু মাত্র এ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট না থাকায় সকল ধরণের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এই হাসপাতালে ১২১টি পদ থাকলেও ৯৪টি পদ দিয়ে চলছে সকল ধরণের কার্যক্রম।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার কেএইচ এম ইফতেখারুল আলম খান জানান, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছে মাত্র ৯টি। ১১টি পদই শূন্য রয়েছে। তারপরও রাণীনগরবাসীর যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের পেশাদারিত্বের কোন ঘাটতি নেই। প্রয়োজনীয় অসুবিধাগুলো সমাধান করা গেলে রাণীনগরবাসী আরও ভাল স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।