বগুড়ার স্থাপত্যবিদ মিঠু’র সংবাদ সম্মেলন
স্টাফ রিপোর্টার : আলোচিত শস্যচিত্রে বঙ্গন্ধুর প্রতিচ্ছবির সফলতা ও গিনেস বুকে স্থান করে নেয়ার পর এবার মেগাসিটি বা গুচ্ছ ভবনের জাতির পিতার আবক্ষ প্রতিকৃতির নকশা তৈরি করেছেন বগুড়ার স্থাপত্যবিদ এবিএম মনোয়ারুল হাসান মিঠু।
দীর্ঘ ২০ বছর সাধনা করে নকশাটি তৈরি করেছেন তিনি, যেটির বাস্তব রূপ দিলে ফুটে উঠবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখচ্ছবি।
আজ রোববার (৩১ মার্চ) বগুড়া শহরের এক হোটেলের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার উদ্ভাবিত গবেষণার নকশাটি গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে উপস্থাপন করেন। স্থাপত্যবিদ মনোয়ারুল হাসান মিঠু বলেন, পৃথিবীতে নানারকম সুন্দর স্থাপত্য যুগে যুগে তৈরি হয়েছে। সেসবের একেকটা একেক রকম বৈশিষ্ট্য নিয়ে টিকে আছে।
নিজস্ব পরিচয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে স্থাপত্য শিল্পে বিশ্বে এই প্রথম হয়তো নতুন একটি মাত্রা যোগ করবে। ইতোমধ্যেই নকশাটির একটি থ্রি-ডি তৈরি করেছেন তিনি। সেখানে পাঁচতলা বিশিষ্ট গুচ্ছ ভবনগুলো আকাশ থেকে দেখতে অবিকল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখচ্ছবি বলে মনে হবে। পুরো গবেষণা শেষ করে যখন নিজের প্রতি দৃঢ় আস্থা দেখতে পেরেছেন ঠিক তখন তিনি বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে উপস্থাপন করেন।
তিনি আরও বলেন, হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই তার এই প্রয়াস। পৃথিবীর কোথাও মানুষের প্রতিকৃতি দিয়ে নির্মিত কোনো স্থাপনা নেই। তাই, মানুষের প্রতিকৃতি দিয়ে প্রস্তুতকৃত এটিই হবে পৃথিবীর সর্বপ্রথম স্থাপনা। এই স্থাপনা বাস্তবায়িত হলে বিশ্বজুড়ে মানুষ দেখবে একজন মহান নেতার অনন্য প্রতিকৃতি। মডেলটি প্রয়োগ করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল হিসেবেও তৈরি করা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রীর সদয় সম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধুর নামে যে কোনো বৃহৎ বা ছোট স্থাপনা এই স্থাপত্যশৈলীতে নির্মাণ করা সম্ভব।
মিঠুর নকশা এবং থ্রিডি অনুযায়ী ভবনটি বাস্তবায়নে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৭৬৫ বর্গফুটের ৯.৮৮১ একর জমির প্রয়োজন। আর মূল অবকাঠামোটি হবে ২ লাখ ২৪ হাজার ৪১৫.২৩ বর্গফুটের মাঝে। পাঁচতলা বিশিষ্ট অবকাঠামোটি নির্মাণে জমির আনুমানিক মূল্যসহ সম্ভাব্য ব্যয় হবে প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন হবে প্রায় ৩ বছর।
এই মডেলে স্থাপনাটি নির্মাণে যে দক্ষ প্রতিষ্ঠান ও লোকবল প্রয়োজন হবে তা দেশেই রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। স্থাপত্যটির তৈরিতে উৎসাহ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বগুড়া এসেছিলেন। সেই সফরে বগুড়ায় ছাত্রলীগের একটি সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রদের উদ্যেশ্যে বলেছিলেন, ‘তোমাদের চিন্তা-শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে নতুন নতুন কিছু দিতে হবে।’
তার সেই কথাকে কাজে লাগাতে তিনি এই গবেষণায় কাজে মনোযোগ দেন। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর সাধনা করার পর তিনি সফলতার মুখ দেখেন। তবে পূর্ণ সফলতা তখনই আসবে যখন এই নকশার বাস্তবায়ন দেখতে পারবেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই কাজ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি এটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবেন।
এবিএম মনোয়ারুল হাসান মিঠুর বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার মৃত ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বাসেতের ছেলে। তিনি বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাস করেন। এরপর বগুড়া সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন ১৯৯৮ সালে।
এরপর আর্কিটেক বিষয়ের ওপর ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর বিভিন্ন বেসরকারি কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। তিনি গবেষণাটি চূড়ান্ত রূপ দিতে গিয়ে সব ধরণের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।