নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন দায়রা জজ আদালত। মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি মোঃ সালাউদ্দিন ওরফে টনি (৩০) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত মুরাদপুর মহল্লার আজিজুর রহমান ওরফে আজু’র পুত্র। আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁর দায়রা জজ মো: আবু শামীম আজাদ আসামির উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ জেলাধীন নিয়ামতপুর উপজেলার ধারণা গ্রামের আবু কালামের কন্যা তুকাজ্জেবার সাথে আসামি সালাউদ্দিনের ২০১৯ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তুকাজ্জেবার ওপর নির্যাতন নেমে আসে। পিতার বাড়িতে আসতে দেয়া হতো না।
অনেক অনুনয় বিনয় করলে ২০২০ সালের ২৯ জুন জামাই টনি তুকাজ্জেবাকে সাথে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ধারণা গ্রামে বেড়াতে আসে। এরই এক পর্যায়ে ১ জুলাই ২০২০ ভোর সাড়ে ৫টায় মেয়ের চিৎকার শুনে বাবা ও মা দরজায় গিয়ে জানতে চান এবং দরজা খোলার চেষ্টা করেন। পরে দরজা ভেঙে দেখতে পান আসামির হাতে একটা কাপড় কাটা কাঁচি।
তুকাজ্জেবার গলার বিভিন্ন ভাবে সেই কাঁচির জখম করার দাগ। লোকজন এসে টনিকে আটকে রেখে মারাত্মক আহত তুকাজ্জেবাকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেøেক্স নিয়ে গেলে সকাল সাড়ে ৬ টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এব্যাপারে তুকাজ্জেবার পিতা আবু কালাম বাদি হয়ে নিয়ামতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে সালাহউদ্দিন টনি’র বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এর প্রেক্ষিতে গত ২২ জুন’২০২২ আসামির বিরুদ্ধে দি প্যানেল কোড ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ শুরু হয়।
মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁর বিজ্ঞ দায়রা জজ এই রায় প্রদান করেন। রায়ে মৃত্যুদন্ডাদেশ ছাড়াও ৫০ হাজার টাকা অর্থ দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে পিপি এডভোকেট মো: আব্দুল খালেক এবং আসামি পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এডভোকেট কাজী মো: আতিকুর রহমান মামলাটি পরিচালনা করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।