দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলাস্থ ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড জিয়ানগর এজেন্ট শাখার প্রোপাইটর মোছা: শাহনারা ও তার স্বামী ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস অফিসার মাহবুবুর রহমান গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। এ ব্যাপারে আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) ব্যাংকের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের হেড়ুঞ্জ মিয়াপাড়া গ্রামের মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী মোছা: শাহনারা ২০২০ সালের ১৯ মার্চ ব্যাংক এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলীর লিখিত অনুমতি পত্র নিয়ে ব্যাংক এশিয়া জিয়ানগর এজেন্ট শাখার কার্যক্রম শুরু করেন।
স্বামী মাহবুবুর রহমানকে ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস অফিসার পদে নিয়োগ দিয়ে গ্রহক সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন।
দিন দিন ব্যাংকে গ্রহকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে ব্যাংকটিতে সঞ্চয়ী ও চলতি গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৯শ’। এছাড়াও ডিপিএস, ফিক্সড ডিপোজিট গ্রাহকের সংখ্যাও প্রায় ৪শ’ জন।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে ব্যাংকটির প্রোপাইটর মোছা: শাহনারা ও তার স্বামী ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস অফিসার মাহবুবুর রহমান গ্রাহকদের রক্ষিত কোটি টাকা সু-কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছেন।
বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ পেলে গ্রাহকরা তাদের একাউন্টের টাকার খবর নিতে ব্যাংকে ভীর করতে থাকে। ভুক্তভুগি গ্রাহক খাদেমুল ইসলাম ৬ লাখ, আকামুদ্দিন মন্ডল ৬ লাখ, আমিনুল ইসলাম ৫লাখ, বেলাল হোসেন, নাজমা আক্তার, রহিমা বিবিসহ অনেকেই জানান, তারা ব্যাংকে তাদের নিজেস্ব একাউন্টে লাখ লাখ টাকা জমা করেছেন। অনেকের স্বামী বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছে একাউন্টে জমাও হয়েছে।
ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দেখেন তাদের একাউন্টে কারো টাকাই নেই। ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস অফিসার মাহবুবুর রহমান গ্রাহকদের সু-কৌশলে ফিংগারের ছাপের মাধ্যমে টাকা নিজ একাউন্টে স্থানান্তর করেন।
পরে অসুস্থতার কথা বলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাহবুবুর রহমান ও তার স্ত্রী প্রোপাইটর মোছা: শাহনারা সবার অগোচরে উধাও হয়ে যায়। ব্যাংকটির রিলেশনশিপ অফিসার গোলাম মাওলা জানান, তিনি ব্যাংকটিতে ঈদের এক সপ্তাহ আগে নাটোর থেকে যোগদান করেছেন।
যোগদানের পর কম্পিউটারে গ্রাহকদের হিসাব গড়মিল দেখতে পান। এতে তার মনে সন্দেহ হয়। তিনি আরও জানান, ব্যাংকটির প্রোপাইটর মোছা: শাহনারা ও তার স্বামী কাস্টমার সার্ভিস অফিসার মাহবুবুর রহমান অসুস্থতার কথা বলে অনিয়মিত ভাবে ব্যাংকে আসা যাওয়া করতেন। গত কয়েকদিন যাবত তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে গ্রহকদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহন করা হচ্ছে। ব্যাংক এশিয়া বগুড়া জেলা শাখার ম্যানেজার শামীম রেজা জানান, এই ঘটনার সাথে ব্যাংক এশিয়ার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
গ্রাহকরা ব্যক্তিগত ভাবে এজেন্ট শাখায় লেনদেন করেছেন। বিষয়টি ব্যাংক এশিয়ার উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। ঘটনাটির তদন্ত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রহকদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ কার্যক্রম চলছে।
ব্যাংক এজেন্ট শাখার প্রোপাইটর মোছা: শাহনারা ও তার স্বামী ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিস অফিসার মাহবুবুর রহমানের আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ চলছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রহকদের টাকা ফেরত প্রদানের অঙ্গিকার করেছেন।
থানা অফিসার ইনচার্জ সনাতন চন্দ্র সরকার জানান, অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।