শাজহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : ‘রাতের বেলা ঢাকায় যাওয়া নিরাপদ নয়’ এমন কথা বলে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার নামে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী গৃহবধূকে রাতের আঁধারে ধান খেতের আইলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের বড়চান্দাই গ্রামের ফসলি মাঠের একটি ধান খেতে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ধর্ষিত ওই গৃহবধূ আসামির নাম, পরিচয় জানাতে না পারলেও শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বারের ওপর ভিত্তি করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধর্ষক রাকিব হাসানকে (২১) বাগবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রাকিব হাসান শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের দড়িনন্দগ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে। সে বর্তমানে গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি এলাকায় বসবাস করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় অবস্থানরত অসুস্থ মাকে দেখতে গত ২৬ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টায় নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আটগ্রাম এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করেন ওই কিশোরী গৃহবধূ (১৬)। রাত পৌণ ৯টায় তিনি বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছেন। সেখানে মোটর শ্রমিকের এক বয়স্ক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করেন বগুড়া থেকে ঢাকায় যেতে বাস ভাড়া কত টাকা লাগবে। লোকটি তাকে বলেন সাড়ে ৫শ’ টাকা লাগবে। এমন সময় অজ্ঞাতনামা যুবক (আসামি রাকিব হাসান) বলে, ‘অত টাকা দিয়ে ভাঙাচোরা গাড়িতে যাওয়া লাগবে না। আমি ভালো গাড়িতে তুলে দিচ্ছি।’ এর কিছু সময় পরে সে বলে ‘এত রাতে ঢাকায় যাওয়া ঠিক হবে না, আজ রাতে আমার বাড়িতে আমার মায়ের কাছে থেকে পরদিন সকালে ঢাকায় যেও।’ এই বলে সে (রাকিব হাসান) নিজের মোবাইল ফোনের সাহায্যে মা পরিচয় দিয়ে এক নারীর সাথে ওই গৃহবধূকে কথা বলিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় ওই গৃহবধূ রাকিবের বাড়ি গিয়ে রাত্রি যাপনে রাজি হন। তবে রাকিব হাসানের ফোন দিয়ে বগুড়ায় রাত্রি যাপনের বিষয়টি নিজ মাকে জানান ওই গৃহবধূ। এরপর রাকিব হাসান সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে করে গৃহবধূকে ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে শাজাহানপুর উপজেলার জালশুকা বাজারের পূর্ব-উত্তরপাশে বড়চান্দাই গ্রামের রাস্তায় নিয়ে যায় এবং অটোরিকশা থেকে নেমে হেঁটে গ্রামের দিকে যায়। কিছু দূর যাওয়ার পর রাত ১০টার দিকে রাস্তার পাশে মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে ধান খেতের আইলে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে গৃহবধূকে ফেলে রেখে চম্পট দেয় লম্পট রাকিব হাসান। এমতাবস্থায় ধর্ষিত গৃহবধূ জালশুকা বাজারে যান এবং স্থানীয়দের সহায়তায় মোবাইল ফোনে স্বামীর সাথে যোগাযোগ করে ঘটনা জানান। সংবাদ পেয়ে স্বামী ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এবং স্ত্রীকে সাথে নিয়ে শাজাহানপুর থানায় গিয়ে মামলা করেন।
অসুস্থ মাকে দেখতে ঢাকায় যাওয়ার পথে অসহায় এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ধর্ষিত গৃহবধূ ধর্ষকের নাম, পরিচয় জানাতে না পারলেও শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বারের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।