হাফিজা বিনা: বাইকের নাম দিয়েছে চার চাকার বাইক। দেখতে অনেকটাই কক্সবাজারের সি বীচে পর্যটকদের বালুর ওপরে চলাচলের জন্য রাখা চার চাকার বাইকের মতই। দেখতে এক হলেও চার চাকার এই গাড়ি অনেক মজবুত ও শক্তিশালী। এই গাড়ি বানিয়ে তাতে চড়ে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে, মালামাল বহন করছে সদ্য স্কুলের গন্ডি পেরুনো তরুণ সোহাগ হোসেন শান্ত। অল্প খরচে বানানো গাড়িটি নিয়ে বের হলে আশেপাশে সারা পরে এবং অনেকেই আগ্রহী ওঠে নিজেরাও বানাবেন বলে।
সোহাগ হোসেন শান্ত। এবছর বগুড়া পৌর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছে । বাড়ি বগুড়া শহরের ১৪ নাম্বার ওয়ার্ডের শাকপালা এলাকায়। বাবা আবুল কালাম একজন কৃষক। দুই ভাইবোনের মধ্যে শান্ত বড়। পড়ালেখার পাশাপাশি শান্ত বাবার সাথে কৃষিকাজ করে ছোটবেলা থেকেই। নিজেদের জমি নেই। প্রায় ১০ বিঘা জমি এগ্রিমেন্ট নিয়ে তারা চাষাবাদ করে। কিন্তু সে দেখে জমির ধান এবং অন্যান্য ভারি কোন কাজ করতে গেলে ভ্যান নয়তো ভটভটি ভাড়া করে আনতে হয়। সেক্ষেত্রে সংসার থেকে বের হয়ে যায় বেশকিছু টাকা। তাই সে ভাবল, একটা চার চাকার শক্তিশালী গাড়ি বানালে কেমন হয় । যেমন কথা, তেমন কাজ। সে মনে মনে ঠিক নিয়ে পাওয়ার টিলারের চারটা বড় বড় চাকা সংগ্রহ করে। এরপর গাড়ি বানাতে তো ইঞ্জিন লাগে সেখানে কাজে লাগায় মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন। এরপর একটু একটু করে বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রপাতি জোগার করে বানিয়ে ফেলে একটি গাড়ি। নিজেই নাম দেয় চার চাকার গাড়ি। তবে সে জানায় তার গাড়িটির কাজ এখনও পুরোপরি শেষ হয়নি।
শান্ত জানায়, এর আগে ২০১৯ সালে পাওয়ার টিলারের পার্টস দিয়ে সে একটা গাড়ি বানিয়েছিল। সেটা দিয়ে সে তেমন কাজ করতে পারেনি। কিন্ত এবারের গাড়িটি কাজে আসছে। এখন সে এই গাড়ি দিয়ে কৃষিকাজের সব ধরণের মালামাল বহন করে। ভারি ভারি মাটির বস্তা, ইট, ধান, সার বহন করছে। সবচেয়ে বেশি ভাল হয়েছে এই গাড়িটি নিয়ে সে মাঝে মাঝেই ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। মাঝে মাঝে তার এই গাড়ি দিয়ে অনেকের ভারি পণ্য বহন করে দিয়ে বাড়তি আয়ও আসছে বলে জানায় শান্ত। সে আরও জানায় এই গাড়িটি বানাতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা । ভবিষ্যতে সে একটা ধান কাটার মেশিন বানাবে যাতে করে শ্রমিক খরচও কমে যায় এবং আয়েরও যেন একট উৎস হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।