নাম মাত্র ইজারা মূল্য
স্টাফ রিপোর্টার : প্রথমে দখল, তারপর কাগজপত্র ঠিকঠাক এই পদ্ধতিতে বগুড়ায় রেলের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। নাম মাত্র ইজারা মূল্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রেলের জায়গা বেহাত হচ্ছে। পরিকল্পিত ভাবে জায়গা ইজারা বা রেলের তত্বাবধানে ভূমির সুষ্ঠু ব্যবহার করলে পরিত্যাক্ত জমি থেকেই বগুড়া রেল বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করতে পারবে।
১৯০০ সালে বগুড়া শহরের উপর দিয়ে রেল লাইন স্থাপন করা হয়। ব্রম্ম্রপুত্র-সুলতানপুর রেলওয়ে কোম্পানী ১৮৯৯ সাল থেকে ১৯০০ সালে সান্তাহার থেকে ফুলছড়ি(তিস্তামুখ পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার দীর্ঘ (৫৮ মাইল মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ করে।
এ সময় বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন তৈরি করা হয়। বর্তমানে লাইন ফুলছড়ি উপজেরার বালাসি ঘাট পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ(২৭ মাইল) বোনারপাড়া-কাউনিয়া লাইন ১৯০৫ সালে নির্মাণ করা হয়। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আওতায় সান্তাহার থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার রেল পথ নির্মাণ করা হয়। বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনকে কেন্দ্র করে সে সময় শত শত একর জমি অধিগ্রহণ করে রেল কতৃপক্ষ।
বর্তমানে বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো রেলের। রেলের জায়গায় গড়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ন মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রেলের যে জমি অবশিষ্ট রয়েছে তা দখলের অপচেষ্টাও থেমে নাই। রেলের ফাঁকা জায়গা পেলেই সেখানে গোপনে বা প্রকাশ্যে দখলের উৎসব চলছে।
বগুড়া রেলের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যায়ের পূর্বপ্রান্তের প্রাচীর ঘেঁষে বালি ভরাট করে জায়গা দখলের অবৈধ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জেলার রেলে বড়কর্তার চোখের সামনে এমন দখলের উৎসব দেখেও দেখছে না রেল কতৃপক্ষ । ইত্পেূর্বে এভাবেই রেলের জায়গা জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে।
বগুড়া রেলের জায়গায় গড়ে উঠা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসেন আলী সরকার মার্কেটের পশ্চিমে নতুন করে দখলের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে স্টল আকার দেওয়া হচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন ফলের আড়তের ব্যানার টানানো হয়েছে। বাঁশের খুটি পুঁতে রেলের জমি দখলেও এই চেষ্টা রেল কতৃপক্ষ দেখেও দেখছে না।
এদিকে রেলের জায়গা প্রতিবর্গপুট মাত্র ৪৫ টাকা হারে লিজ দেওয়ায় কয়েকটি চক্রের খপ্পরে রয়েছে বগুড়ার রেলের জমি। তারা মাত্র ৪৫ টাকা বর্গ ফুট দরে লিজ নিয়ে লাখ লাখ টাকায় ভাড়া দিচ্ছে। রেলের জমি ব্যবহার করে/লিজ নিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা হচ্ছে প্রভাবশালীরা।
বগুড়া রেলওয়ের কানুনগো গোলাম নবী জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসেন আলী সরকার মার্কেটের পশ্চিমে ৩৫ হাজার ৮৫০ বর্গফুট জমি ইজারা দেওয়ার জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়েছিলো। টেন্ডারে একটি প্রতিষ্ঠান পেয়েছিলো কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান রাজস্ব জমা না দেওয়ায় তা বাতিল হয়ে যায়। পরে এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে হাইকোটে আপিল করা হয়।
আপিলে ওই প্রতিষ্ঠানকে টাকা জমা দিয়ে লিজ নিতে বলা হলেও ওই প্রতিষ্ঠান টাকা জমা দেয়নি। তিনি বলেন, ফলের আড়তের আড়ালে কারা রেলের জায়গা দখল করছে তা তিনি জানে না। তিনি আরও জানান, রেলের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা শুরু হয়েছে।
জহুরুল ইসলাম নামের জনৈক আইনজীবী আজিজুল হক কলেজের সামনে প্রায় ২শ’ ফুট জায়গা দখল করে ছিলো। তাকে শনিবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি বলেন রেলের জমির ইজারা সব হেড অফিস থেকে হয়। তাই সব কিছু তিনি জানেন না। তিনি আরও জানান, বগুড়ায় রেলের জায়গা প্রতিবর্গফুট ৪৫ টাকা হারে লিজ দেওয়া হয়। ওই হারে রাজস্ব জমাদেন বর্তমান লিজ গ্রহিতারা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।