ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : চারদিকে তারকাঁটা, বাঁশ আর নেটের বেড়া। লতানো গাছের মাচায় থোকায় থোকায় রসালো আঙ্গুরে ছেয়ে গেছে পুরো বাগান। দেশের মাটিতে ভিনদেশি এই ফলের বাগান এবং ফল দেখে যে কেউ অভিভূত হবেন। এই ফল চাষে সম্ভাবনা দেখছে কৃষিবিভাগ।
শখের বশে পরীক্ষামুলকভাবে আঙ্গুর চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন বগুড়ার ধুনট উপজেলায় হেউডনগর-কোদলাপাড়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল হাকিম (৩২)। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রায় ৪ বিঘা জমিতে পেয়ারা, বরই, আম, ড্রাগনসহ বিভিন্ন জাতের ফল চাষ শুরু করেন।
এসব ফল চাষে তিনি সফলও হয়েছেন। তারপর উচ্চতর শিক্ষা (কামিল পাশ) শেষ করে চাকরীর পেছনে না ঘুরে ফল চাষের পরিধি বৃদ্ধি করার চিন্তাভাবনার সময় ইউটিউবে আঙ্গুর চাষের সফলতার ভিডিও দেখে উৎসাহিত হন। এরপর তিনি সাত শতক জমির ড্রাগন ফল চাষ বাদ দিয়ে সেখানে আঙ্গুুর গাছ রোপণ করেন।
অন্যান্য ফল-ফসলের মতো বিদেশি আঙ্গুর চাষেও সফল হওয়া যায়-এটি প্রমাণ করেছেন তিনি। তার বাগানে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, লতায় পেঁচানো গেট সদৃশ মাচার ভেতর দিয়েই ঝুলছে আঙ্গুর। এমন সফলতা দেখতে উদ্যোক্তা, চাষিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন তার বাগানে।
এলাকাবাসী জানান, কমলা, আম, পেঁপেসহ নানা জাতের ফলের মধ্যে আঙ্গুরের চাষ ব্যতিক্রম। তার বাগানে থোকায় থোকায় ধরে থাকা আঙ্গুর দেখতে খুব ভাল লাগছে। এভাবে বাগান করলে বিদেশী এই ফল আর আমদানী করতে হবে না।
কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল হাকিম জানান, একটি আঙ্গুর গাছ থেকে কমপক্ষে ২০ বছর ফল পাওয়া যাবে। প্রথম বার তিনি ২০ হাজার টাকা খচর করে ৫০ হাজার টাকার আঙ্গুর বিক্রি করেছেন। প্রতি ছয় মাস পর পর আঙ্গুর পাওয়া যায়। এ বছর বাগানে বিভিন্ন জাতের ও স্বাদের আঙ্গুর চাষ করেছেন। এরমধ্যে ভারতীয় চয়ন ও সুপার সোনিকা প্রজাতিও আছে।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, এখানকার মাটি আঙুর চাষের উপযোগী। আব্দুল হাকিমের বাগানটি তিনি দেখেছেন। আঙুর চাষে এই উপজেলাকে পথ দেখাচ্ছেন হাকিম। অন্য কোনো কৃষি উদ্যোক্তা যদি আঙ্গুর চাষে আগ্রহী হন তাহলে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়ার কথাও জানিয়েছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।