স্টাফ রিপোর্টার : কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনায় টানা পাঁচ দিন সারাদেশে বন্ধ থাকে ইন্টারনেট। সহিংসতা বন্ধে দেশজুড়ে জারি করা হয় কারফিউ, ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি।
টানা পাঁচদিনের উদ্ভুত এমন পরিস্থিতির পর আজ বুধবার (২৪ জুলাই) বুধবার সরকারি-বেসরকারি অফিস চার ঘণ্টার জন্য খোলার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই সঙ্গে খুলে দেওয়া হয় দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
আজ বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকেই বগুড়ার ব্যাংকগুলোর শাখায় শাখায় গ্রাহকরা ভিড় করেন। ব্যাংকগুলোতে সেবা গ্রহীতাদের অধিকাংশই আসেন টাকা তুলতে। টানা সহিংসতা ও কারফিউয়ের কারণে মোবাইল ফিন্যান্স কোম্পানি ও এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। এতে করে নগদ টাকার সংকটে পড়েন অনেকেই।
এর ফলে আজ বুধবার (২৪ জুলাই) অধিকাংশ গ্রাহকই ব্যাংকে গেছেন টাকা উত্তোলন করতে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টাকা উত্তোলনের জন্য সোনালী ব্যাংক বগুড়া কোর্পোরেট শাখায় অপেক্ষা করছিলেন আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে নগদ টাকার জন্য বেশ অস্বস্তিতে ছিলাম। এটিএম বুথ থেকেও টাকা তুলতে পারিনি। ব্যাংক খোলার কথা শুনেই চলে এসেছি।
আরেক গ্রাহক আব্দুল আলিম বলেন, যে দিন সহিংসতা শুরু হয় সেদিন পকেটে মাত্র ৩৭০ টাকা ছিল, কিন্তু বাড়িতে বাজার ছিল না। গত কয়েক দিন ধার-দেনা করে চলেছি। তাই সকাল সকাল এসে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়ায়, দীর্ঘ লাইন শেষে টাকা হাতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
আব্দুল হক নামের আরেক গ্রাহক এসেছেন ইসলামী ব্যাংকে। তিনি বলেন, নগদ টাকা সংকটের কারণে নানা সমস্যায় পড়েছি। বাজার করতে পারছিলাম না। আজ ব্যাংক খুলেছে, লেনদেন করতে পেরে ভালোই লাগছে। অন্তত কাছে টাকা থাকায় মনে শান্তি পাচ্ছি।
সোনালী ব্যাংক পিএলসি বগুড়া কর্পোরেট শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ এনামুল হক বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় চাপ অনেক বেশি ছিল, কারণ দীর্ঘ পাঁচদিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা টাকা তুলতে ভিড় করেছেন। গ্রাহকের ভিড় সামাল দিতে কাউন্টারে অতিরিক্ত লোক দিয়ে চাপ সামাল দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন বেশি করেছেন। পুরো ব্যাংকিং সময়টাতেও লেনদেন চলেছে।
আজ বুধবার (২৪ জুলাই) বুধবারের পর আজ বৃহস্পতিবারও ব্যাংক খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। কারফিউ ও সাধারণ ছুটির কারণে টানা তিন দিন বন্ধের পর আজ বুধবার (২৪ জুলাই) বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা থাকছে। আজ বুধবার (২৪ জুলাই) বুধবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চলবে এসব শাখা, যেখানে সীমিত পর্যায়ে কিছু সেবা মিলবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছে পাঠানো নির্দেশনায় এই বার্তা দিয়েছে। পাশাপাশি এমডিদের বলা হয়েছে, বুধবার ব্যাংকের ৫০ শতাংশ শাখা ও বৃহস্পতিবার ৭৫ শতাংশ শাখা খোলা রাখতে হবে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কারফিউ শিথিল থাকার সময়ে বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নির্ধারিত শাখায় সীমিত আকারে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করতে হবে। ব্যাংকগুলো তাদের সুবিধামতো শাখা খোলা রাখার উদ্যোগ নেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সীমিত ব্যাংকিং সুবিধা বলতে মৌলিক ব্যাংকিং, অর্থাৎ টাকা জমা ও উত্তোলনের সুবিধাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। ঋণপত্র, পে-অর্ডার, হিসাব খোলাসহ অন্যান্য সেবা এ সময়ে মিলবে না। ব্যাংকগুলো শুধু মৌলিক সেবা দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের অফিসে আনার উদ্যোগ নেবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।