ভিডিও

নওগাঁর রাণীনগরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বেচা-কেনার মহোৎসব

মাসের পর মাস অধিকাংশ ঘরেই ঝুলছে তালা

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৪, ০৬:৩৩ বিকাল
আপডেট: জুলাই ২৭, ২০২৪, ০৬:৩৩ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি বেচা-কেনার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প একডালা ইউনিয়নের ডাকাহার চৌধুরীপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু ডাকাহার আশ্রয়ণ প্রকল্পেই নয় উপজেলার অন্যান্য প্রকল্পেও এমন ঘটনা ঘটছে।

উপজেলার কালিগ্রাম মুনসিপুর গ্রামের মৃত তহির উদ্দীন মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মে মাসে উপজেলার সদ্য বিদয়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুম কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু গত ২৯ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবং ইউএনও উম্মে তাবাসসুমের বদলিজনিত কারণে সেই তদন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।

গৃহিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের কয়েকটি ধাপের আওতায় উপজেলার একডালা, কালীগ্রাম, বড়গাছা ও কাশিমপুর ইউনিয়নে ১ম পর্যায়ে ৯০টি, ২য় পর্যায়ে ৩৩টি ও ৩য় পর্যায়ে ৫৩টিসহ মোট ১৭৬টি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারকে পুর্নবাসন করা হয়েছে।

দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি বাড়িতে দুটি কক্ষ, সংযুক্ত রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দাও রয়েছে। প্রতিটি আশ্রয়ই পল্লীতে বাড়ি নির্মাণের সাথে সাথেই বিদ্যুৎ সংযোগ, বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবয়েল স্থাপন, চলাচলের জন্য রাস্তা ও নামাযের জন্য মসজিদসহ প্রধান প্রধান প্রয়োজনগুলো নিশ্চিত করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলার একডালা ইউনিয়নের ডাকাহার চৌধুরী পুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে কয়েক দফায় ৫৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার এসব ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে নির্মাণ করা হলেও প্রকল্পের অধিকাংশ ঘরই অনৈতিকভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যাদের জমি ও বাড়ি উভয়ই আছে এমন সব ব্যক্তিদের।

যারা উদ্বোধনের কিছুদিন পর থেকে ঘর বেচা শুরু করেন। ফলে বৈধ উপায়ে ঘর না পাওয়ায় অনেকে নিরূপায় হয়ে মোটা অংকের টাকা দিয়ে দালদের মাধ্যমে ঘর কিনে বসবাস করছেন। আবার অনেকে অল্প দামে ঘর কিনে রেখেছে ভবিষ্যতে বেশি দামে বিক্রির আশায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পে যেন শুরু হয়েছে ঘর বেচা-কেনার মহোৎসব।

অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি ঘর প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীনরা পায়নি। যারা শুরু থেকেই অফিসের দালালদের সাথে আঁতাত করে আর্থিক লেনদেন বজায় রেখেছিলেন তারাই অন্যায়ভাবে সুবিধাভোগ করছেন। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের মাঝে ঘরগুলো বরাদ্দ প্রদান হোক।

একডালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান আলী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘরগুলো হাত বদল হচ্ছে। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মাসিক সভায় এই বিষয়ে একাধিকবার বলার পরও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমন সব অন্যায় ও অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে আশ্রয়ণ প্রকল্প সমিতির পদে থাকা প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তিরা পুরোদমে জড়িত।

প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি করছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমীন জানান, এই উপজেলায় তিনি নতুন যোগদান করেছেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS