ভিডিও

বগুড়ার সড়ক থেকে চাঁদাবাজ উধাও

যুবলীগ-শ্রমিকলীগ নামধারীরা লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলতো

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ০৫:৩১ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২৪, ১২:৫৬ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় সড়ক থেকে চাঁদাবাজরা উধাও হয়ে গেছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর সড়কে বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়কারী যুবলীগ ও শ্রমিক লীগ নামধারী চাঁদাবাজরা পালিয়েছে। যে কারণে যানবাহন থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ হয়ে গেছে। সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ শুরু করায় এখন চাঁদাবাজদের দেখা যাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রটি সক্রিয় ছিল রাজনৈতিক ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকনেতাদের ছত্রচ্ছায়ায়। তবে শিক্ষার্থীরা যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। শিক্ষার্থীদের ভয়ে চাঁদাবাজরা সটকে পড়েছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যানবাহনের চালকরা।

জানা যায়, বগুড়া শহরের গোহাইল সড়ক, শেরপুর সড়ক, স্টেশন সড়ক, চেলোপাড়া, দত্তবাড়ী, বনানী, শাকপালা, বড়গোলা, নাটাইপাড়ার কাজী বাড়ির মোড় এলাকার বিভিন্ন স্ট্যান্ডসহ চারমাথা বাস টার্মিনাল এলাকা ও বিআরটিসি মার্কেটের সামনে থেকে প্রতিদিন যানবাহন থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছিল চাঁদাবাজরা।

বিভিন্ন স্ট্যান্ড ছাড়াও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, বাস-কোচও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকেও চাঁদা আদায় করে যাচ্ছিল তারা। বিভিন্ন সড়ক ও সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন নামে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হতো। যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রভাবশালী নেতারা এসব চাঁদাবাজিতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। তবে এসব নেতারা আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই পলাতক রয়েছে।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে শিক্ষার্থীরা সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করাসহ তদারকি শুরু করলে কাউকে চাঁদা তুলতে দেখা যায়নি। এদিকে, ট্রাফিক পুলিশের নামেও যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করা হতো। রেজিস্ট্রেশনবিহীন ও রেজিস্ট্রেশনকৃত গাড়ির জন্য আলাদা আলাদা চাঁদা তুলে ট্রাফিক পুলিশকে দেয়া লাগতো।

এছাড়া সিএনজি অটোরিকশার যে কোন সমিতিতে নতুন গাড়ি ভর্তি করানোর জন্য তিন থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হতো গাড়ীর মালিকদের। সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা জানান, সিএনজি অটোরিকশা সড়কে বের করলে প্রতিদিন তাদের চেইন চাঁদাসহ ৫০ থেকে ১০০ টাকা সড়কে খরচ হতো। কিন্তু মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা উঠলেও কোনদিন মালিক সমিতি চালক বা মালিকদের কল্যাণে এক টাকাও ব্যয় করতে দেখা যায়নি।

সিএনজি মালিকরা জানান, তারা অনেক কষ্টে ঋণ করে অটোরিকশা কেনেন। এরপর জীবিকা নির্বাহের জন্য সেই গাড়ি রাস্তায় নামাতে গিয়ে তাদের চাঁদাবাজির শিকার হতে হয়। সিএনজি সমিতিতে ভর্তি, প্রতিদিন চেইন চাঁদা, এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় গেলে বাড়তি চাঁদা দিতে হয়। সড়কে চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েন তারা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভালো।

কোথাও আর চাঁদা দিতে হচ্ছে না। সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, সড়কে যারা চাঁদা তুলতো তারা পালিয়েছে। চাঁদাবাজি না করলে যানবাহনের ভাড়াও কমবে বলে তাদের বিশ্বাস। তবে এখন সড়কে চাঁদাবাজি নেই। সড়ক থেকে চাঁদাবাজরা পালিয়েছে। বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: সাইফুল ইসলাম গতকাল জানিয়েছেন, বগুড়ায় কোন সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, বাস, মিনিবাস, কোচ, ট্রাকসহ কোন যানবাহন থেকে যদি কাউকে যদি চাঁদা তুলতে দেখা যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কাউকে কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি চাঁদাবাজদের ধরে সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে জনসাধারণকে অনুরোধ করেন। সেইসাথে ফুটপাতেও কেউ চাঁদাবাজি করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো: শিগ্ধ আখতার বলেন, বগুড়ায় সড়কে কাউকে চাঁদাবাজি করতে দেয়া হবে না। চাঁদাবাজি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সড়কে বিভিন্ন যানবাহন থেকে যারা চাঁদাবাজি করতো তারা পালিয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS