করতোয়া ডেস্ক : আজ সোমবার (১৯ আগস্ট)ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে একধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ হয়েছে। কোন কোন স্থানে সভাপতিরও পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-
ধুনট (বগুড়া) : নানা অভিযোগে এনে বগুড়ার ধুনট মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ এসএম জিয়াউল হকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ধুনট মহিলা ডিগ্রী কলেজের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আয়োজনে ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ, কলেজের উন্নয়মূলক কাজের অর্থ, শিক্ষকদের সরকারি টাকা আত্মসাত ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে বিভিন্ন ফি আদায়সহ প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
মানববন্ধন চলাকালে ধুনট মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক মোজাহারুল আনোয়ারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অত্র কলেজের উপাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম, সহকারি অধ্যাপক্ষ নুরে-এ-আলম জুয়েল, ছানোয়ার হোসেন, আনিছুর রহমান, সাবনা ইয়াসমিন, অফিস সহকারি হাসান শহিদ, শাহাদৎ হোসেন, শিক্ষার্থী উর্মি খাতুন, আসমনি আকতার, তামান্না খাতুন, রুবাইয়া খাতুন, মিষ্টি খাতুন ও রিক্তা আকতার।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ এসএম জিয়াউল হক বলেন, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা।
শাজহানপুর (বগুড়া) : নিয়োগ বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আজ সোমবার (১৯ আগস্ট)ও বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, মঝিড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, শাহনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও চোপীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, সড়ক অবরোধ, অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা সভাপতি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগের দাবি জানায়।
গভর্নিং বাডির সভাপতি আলী ইমাম ইনোকী এবং অধ্যক্ষ মোতাহার আলী মুকুলের পদত্যাগের দাবিতে আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) ৬ষ্ঠ দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ ও বগুড়া-নাটোর সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলার গোহাইল ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত বগুড়া-নাটোর সড়কে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা যাবত অবরোধ করে রাখে। এতে সড়কের দু’ধারে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সংবাদ পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে সেনা সদস্যরা পৌঁছেন। দুপুর সোয়া ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।
অপরদিকে ইউএনও’র নির্দেশে সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তদন্ত করতে বেলা আড়াইটার দিকে প্রতিষ্ঠানে হাজির হন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুহম্মদ আমিরুল ইসলাম। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়।
সভাপতি মো. নুরুজ্জামান এবং প্রধান শিক্ষক মির্জা দিলরুবা লাকি’র পদত্যাগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে মাঝিড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত রোববার মহাসড়ক অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছে
দুর্নীতির অভিযোগে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন করছে উপজেলার শাহনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই সভাপতি মানিকুর রহমানসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন।
প্রধান শিক্ষক মুঞ্জুরুল হক গা ঢাকা দিয়েছেন। ইউএনও’র নির্দেশে আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে শাহনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তে যান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুল হোসেন।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে আড়াই ঘণ্টা পর তিনি ওই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। এসময় তিনি স্টাফ কাউন্সিলের সভা ডেকে একজন সিনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করে স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষক-কর্মচারিদের পরামর্শ দেন। অপরদিকে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক সোহেল আখতারের পদত্যাগে দাবিতে আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলার চোপীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তারা এর আগে একই দাবিতে গতকাল রোববার ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। আন্দোলন কর্মসূচির প্রেক্ষিতে অভিযোগ তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি এনামুল হক সাহিন। তদন্ত কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহসিয়া তাবাসসুম জানান, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা কঠোর অবস্থানে থাকায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কিছু করা নাই। তদন্ত করে শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হবে।
শিক্ষার্থীরা তদন্ত কর্মকর্তাকেও অবরুদ্ধ করে রাখছে। এভাবে সমাধান করতে গেলে বেশ সময় লাগবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তো সময় দিচ্ছেনা। তারা চায় তাৎক্ষণিক সমাধান। তবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এগিয়ে এলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।