রাজশাহী প্রতিনিধি : পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাইদার মালিথাকে (৫৫) হত্যার দায়ে ৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আরও ৫ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন এ মামলার আরও সাত আসামি। আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, পুলিশ নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত না থাকায় আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে নেওয়া হয়নি। তাদের কারাগারে রেখেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয় রায় ঘোষণার সময়।
এভাবে ভার্চুয়ালি রায় দেওয়া হয়। মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা, তার ভাই স্বপন মালিথা, রিপন মালিথা, আশিক মালিথা, রাকিব মালিথা, আরাফাত হোসেন ইসতি, মো. রঞ্জু, মো. জনি ও আলিফ মালিথা।
যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দুলাল মালিথা, মো. রাজু, হায়দার মালিথা, সঞ্জু মালিথা ও বেলাল হোসেন উজ্জ্বল। আসামিদের সবার বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার চর প্রতাপপুর কাবলিপাড়া গ্রামে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বেশিরভাগই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলাউদ্দিন মালিথার নিকটাত্মীয়।
বাকিরা ভাড়াটে খুনি। হত্যাকাণ্ডের শিকার সাইদার মালিথা ও আসামি আলাউদ্দিন মালিথা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। সাইদার মালিথা পাবনার সদর উপজেলার চর প্রতাপপুর কাবলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি জানান, সাইদার মালিথা ও আলাউদ্দিন মালিথার মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সাইদার মালিথা আলাউদ্দিন মালিথার কাছে ৩০ লাখ টাকা পেতেন।
এই টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তাই সাইদারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর বাঙাবাড়িয়ার নজুর মোড়ে চা খাচ্ছিলেন সাইদার মালিথা।
এ সময় তাকে গুলি করা হয়। সাইদার বুকে গুলি নিয়ে দৌড়ে পাশের বাঁশঝাড়ের দিকে গিয়ে পড়ে যান। সেখান থেকে তাকে ধরে নজুর মোড়ে এনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১২টি ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এরপর হামলাকারীরা লাশ ফেলে রেখে চলে যান। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে পুলিশ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, মামলার সব আসামিই কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত যে সাতজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হবে। রায় ঘোষণার সময় বাদি ও আসামিদের পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।