ভিডিও

গাজীপুরে পরমাণু কেন্দ্রের বৃক্ষ নিধন; আপত্তি পরিবেশবাদিদের

প্রকাশিত: নভেম্বর ০১, ২০২৪, ০১:০৭ দুপুর
আপডেট: নভেম্বর ০১, ২০২৪, ০১:০৭ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

নিউজ ডেস্ক:  গাজীপুরের পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্রের ৫৪টি গাছ জ্বালানি কাঠ হিসেবে কাটার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে এতগুলো গাছ কেটে ফেলা নিয়ে আপত্তি করছেন পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে গাছা কাটা শুরুও করা হয়েছে। 

পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্রের মাঠের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে এই গাছগুলো দাঁড়িয়ে আছে। সম্প্রতি ৪১টি কাঁঠালগাছসহ ওই ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক গবেষণা মাঠে থাকা একটি শিমুল, নয়টি আম ও তিনটি তালগাছ জ্বালানি কাঠ হিসেবে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয় সেখানকার কর্তৃপক্ষ।

প্রকাশিত নিলাম বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, দশটি শর্তসাপেক্ষে তারা গাছগুলো জ্বালানি কাঠ হিসেবে নিলামে বিক্রি করতে চায়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে সেখানে গাছগুলো থেকে সম্ভাব্য জ্বালানি কাঠের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর একটি স্মারকে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ইনস্টিটিউটের ভাণ্ডার কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। 

এদিকে স্থানীয় ঐতিহ্য হওয়ায় ও পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে এতগুলো গাছ কেটে ফেলা নিয়ে আপত্তি করছেন পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ কর্মী মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র যেখানে সারাদেশে বৃক্ষরোপণের তাগিদ দিচ্ছে, সেখানে প্রায় শতবর্ষী গাছ বিক্রয় করা হচ্ছে। কাঁঠাল, আম, শিমুল ও তালগাছসহ মোট ৫৪টি পুরাতন ঐতিহ্য স্মৃতি বিজড়িত গাছগুলো বিক্রি করে পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি অক্সিজেনের ঘাটতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে তালগাছ রোপণ করার জন্য বলা হলেও এখানে পুরাতন তাল গাছ নিধন করা হচ্ছে। আমরা এমন সিদ্ধান্ত বাতিল চাই। গাছ কাটা নয়, রোপণ করে পরিবেশ সুরক্ষা করতে হবে।’ 

গাছা কাটা শুরু হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনেকে গাছগুলো রক্ষা করার জন্য জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগও করেছেন বলে জানা গেছে। 

পরিবেশ ও বৃক্ষ রোপণের নানা কর্মসূচি নিয়ে কাজ করেন গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক্ষ আমিনুল ইসলাম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের এই সময়ে গাছকে বাঁচিয়ে স্থাপনা করা গেলেই ভালো হয়। এতে সকলের জন্যই মঙ্গল।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহের গাজীপুরের শিরিরচালা আঞ্চলিক কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, এখানে আম ও সবজিসহ বিভিন্ন ফল ও সবজির রেডিয়েশন দেয়ার জন্য একটি সেন্টার করা হবে। যেখানে সেন্টার করা হবে সেখানে এই গাছগুলি পড়েছে। তাই আমাদের হেড অফিস থেকে গাছ কাটার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলেই গাছ কাটা শুরু হবে। স্থাপনা তৈরির জন্য তিন একর জমির প্রয়োজন। তাই গাছ কাটা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। আর বিজ্ঞপ্তিটি আমি দেইনি, দিয়েছে আমাদের হেড অফিস থেকে। 

গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া জানান, বিষয়টি শুনেছি। জানতে পেরেছি এটি পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রকল্প। তাদের নিজেদের জায়গা। তারা যেহেতু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তাই এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার এখতিয়ার নেই। আপনি তাদের চ্যানেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS