করতোয়া ডেস্ক: টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার ওই ১৪ পণ্যকে জিআই সনদ দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে সনদ বিতরণের আয়োজন করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর।
জিআই সনদ পাওয়া ১৪টি পণ্য হলো- টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশ ব্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মন্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশি কাঁথা।
সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ছোট একটি দেশে অনেককিছু আছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, হস্তশিল্প সবকিছুই আছে আমাদের। আজ যেসব পণ্যকে সনদ দেওয়া হলো, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় যুগ যুগ ধরে সেগুলো গড়ে উঠেছে। এখানকার মাটি, জল, আবহাওয়া সবকিছুর সঙ্গে প্রতিটি পণ্যের একটা যোগসূত্র রয়েছে। ইচ্ছে করলেই এটাকে নকল করা যাবে না, অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে না। আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগ যুগ ধরে এ সব পণ্য ব্যবহার করে এসেছেন। প্রতিটি অ লে যেখানে যেটা আছে সবকিছুর একটা ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে।’
দেশের পণ্যের প্রচার বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যের প্রচার দরকার। বাইরে প্রচারণা চালাতে হবে, জেলায় জেলায় চালাতে হবে। প্রচারণার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াও ব্যবহার করা যেতে পারে। একইসঙ্গে আমদের পণ্যগুলোর কোয়ালিটিও মেইনটেইন করার প্রয়োজন আছে।’
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘আমাদের মৃত্তশিল্পে বিশাল সম্ভাবনা আছে। আমরা যখন কান্তাজীর মন্দির দেখি কিংবা মোঘল আমলের মসজিদ দেখি সেখানেও কিন্তু এর কাজ রয়েছে। নিশ্চয়ই সেগুলো আমাদের শিল্পীদের করা। আমাদের এ সব ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। একইসঙ্গে বিশ্বের কাছে আমাদের ঐতিহ্যগুলোকে পরিচিত করতে হবে।’
এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা শুনেছি ভারত ৭০০ পণ্যের জিআই প্রদান করেছে। এ ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের শুধু পণ্যের জিআই করলেই হবে না, প্যাটেন্টও (কৃতিস্বত্ব) করতে হবে। তাহলে কেউ আর পণ্য নিয়ে যেতে পারবে না।’
ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস বলেন, ‘সারা বিশ্বে বলা হয় বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ। কিন্তু আমি বলি, বাংলাদেশ দরিদ্র না। হয়তো মাথাপিছু আয় অন্যদের থেকে কম। কিন্তু আমি সব সময় বলি বাংলাদেশ অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি দেশ। কেননা বাংলাদেশের যে শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আছে সেটা পৃথিবীর অনেক দেশের থেকেই অনেক বেশি। আমরা অনেক বেশি সমৃদ্ধ এবং এটা সবাই স্বীকার করে। আমরা এ ক্ষেত্রে অনেকের থেকে এগিয়ে আছি।’
এ সময় টাঙ্গাইল শাড়ি জিআই সনদ গ্রহন করা টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এডিসি জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে টাঙ্গাইল শাড়িকে ভারতের শাড়ি বলে তারা জিআই সনদ দিয়েছে। এ জন্য আমাদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানের একটা ল’ফার্মকে নিয়োজিত করা হয়েছে, টাঙ্গাইল শাড়ির স্বীকৃতি যেন শুধু বাংলাদেশের থাকে সে বিষয়ে কাজ করার জন্য। আশা করছি, আমরা জয়ী হবো।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।