সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : সারিয়াকান্দিতে গ্রাহকের কোটি টাকা সঞ্চয় নিয়ে উধাও হয়েছে সাধনা ফাউন্ডেশন নামে একটি ভুয়া এনজিও। লোন উত্তোলনের দিন গ্রাহকেরা লোন নিতে এসে দেখেন রাতারাতি চম্পট দিয়েছে এনজিও অফিসের সকল সদস্যরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত কয়েকদিন আগে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সারিয়াকান্দি উপজেলায় এসে বিভিন্ন ইউনিয়নে মাঠ পর্যায়ে সদস্য সংগ্রহ শুরু করে ‘সাধনা ফাউন্ডেশন’। সদস্য সংগ্রহের সময় তারা গ্রাহকের কাছ থেকে ৩৪০ টাকা করে ভর্তি ফি নেয় এবং তাদেরকে মোটা অঙ্কের লোন দেয়ার আশ্বাস দেন। পরে গত ৩১ মে রাতে উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের আমতলী গ্রামের আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মঈন উদ্দিন সবুজের স্ত্রী জয়া আক্তারের বাসা ভাড়া নিয়ে তারা সাধনা ফাউন্ডেশন নামে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। সেখানে তারা এ প্রতিষ্ঠানকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত’ বলে পরিচয় দেয় এবং এর একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বরও উল্লেখ করে।
গত বুধবার এবং পরের দিন বৃহস্পতিবার ছিল এ সমিতির লোন বিতরণের তারিখ। এর আগে এনজিও’র কর্মকর্তারা গ্রাহকদের লোন দেয়ার কথা বলে অফিসে ডেকে লাখ প্রতি ৮০০০ টাকা করে সঞ্চয় জমা নেয়। বুধবার সকালে লোন নিতে এসে গ্রাহকেরা শোনেন এনজিওটি তাদের ঠকিয়ে সমিতির মেইন গেইটে তালা দিয়ে পালিয়েছে। গ্রাহকেরা জানান শতাধিক গ্রাহকের কোটি টাকার বেশি নিয়ে পালিয়েছে সাধনা ফাউন্ডেশন নামে ভুয়া এ এনজিও। আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভুক্তভোগীরা জানান, ঠান্ডা মিয়ার ১৬ হাজার, মোফাজ্জল হোসেনের ৮ হাজার, খালেদা বেগমের ২৪ হাজার, জাহিদুল ইসলামের ৮ হাজার, শাপলা বেগমের ৩২শ’, শহিদুলের ৮হাজার, করিম মিয়ার ১৮ হাজার, পাতানি বেগমের ১৬ হাজার টাকাসহ শতাধিক গ্রাহকের সঞ্চয়ের কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ভাড়া বাসার মালিক জয়া আক্তারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি মুঠোফোনে জানান, এনজিওর লোকজন যে ভুয়া তা তিনি বুঝতে পারেননি।
ফুলবাড়ি চর হরিণা গ্রামের ঠান্ডা প্রামাণিকের স্ত্রী সীমা বেগম বলেন, ‘এনজিওর লোকজন আমার বাড়িতে গিয়ে কথা বলে সেখানে দল গঠন করে। সেই দলের সভানেত্রী আমাকেই বানায়। তারপর আমিসহ আমার দলের সকল সদস্য সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে সঞ্চয় জমা দেয়। গতকাল বুধবার লোন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এনজিওর অফিসে লোন নিতে এসে দেখি তারা আমাদের কষ্টের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। এখন আমি কী করবো, আমার দলের সবাই তো এখন আমাকেই ধরছে।’
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে বুধবার রাতে গ্রাহকদের একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পুলিশের তদন্ত চলমান রয়েছে। অভিযুক্তদের খুঁজে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।