আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চলে চঞ্চলের। স্বল্প খরচ অধিক লাভ হলেও পরিশ্রম বেশি এই ব্যবসায়। একটি তাল গাছের সম্পূর্ণ তাল কিনতে খরচ হয় ২৫০ থেকে ৩শ’ টাকা। সেই তাল সারাদিনে ভ্যানযোগে বিক্রি করে খরচ বাদে তার লাভ তাকে হাজার বারো শ’ টাকা।
আক্কেলপুর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সুস্বাদু তাল শাঁস। প্রচন্ড তাপ প্রবাহে বেড়েছে ফলটির কদর। আক্কেলপুর পৌর শহরের অলিগলিসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও গ্রামের মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস। একটি শাঁস ৫ টাকা এবং একটি তাল ১৫-২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্য ফলের ক্ষেত্রে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।
কিন্তু তাল শাঁসে এসবের প্রয়োজন হয় না। তাই ভেজাল মুক্ত তাল শাঁসের কদর বেশি। আক্কেলপুর সরকারি মুজিবর রহমান কলেজ গেটের সামনে ভ্যানযোগে তালশাঁস বিক্রি করছেন, উপজেলার সোনামূখী ইউনিয়নের জাফরপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম চঞ্চল। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে তালগাছ মালিকদের কাছ থেকে তাল সংগ্রহ করেন।
পরে আক্কেলপুর পৌর কলেজ বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে তাল বিক্রি করেন। চঞ্চল বলেন, প্রতিবছরই এ সময়ে জৈষ্ঠ্যের প্রথম সপ্তাহ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত আমি তালশাঁস বিক্রি করি। গরমের সময় প্রচুর চাহিদা থাকে। দাম ভালো পাওয়া যায়। সারাদিনে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার তালের শাঁস বিক্রি হয়। প্রায় এক হাজার টাকা মুনাফা থাকে।
তিনি বলেন, তালগাছ থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফল কেটে আনা কষ্টকর বিষয়। অতিরিক্ত পরিশ্রম দিয়ে কেটে আনতে হয়। একটি গাছে ৫শ’ থেকে ৭শ’ তাল পাওয়া যায়। আক্কেলপুর পৌর সভার কলেজ গেটের সামনে তালশাঁস কিনতে আসা হাইটেক কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক মোঃ সাহাজান আলী বলেন, গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালশাঁস অনেক উপকারী।
এর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। খেতেও সুস্বাদু। আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, এবছরে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) এর অর্থায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে উপজেলায় ৪শ’ তাল গাছের চারা রোপন করা হয়েছে।
তাল গাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো বজ্রনিরোধক। তালশাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমের দিনে তালশাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ,বি ও সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রনসহ অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।