উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : উল্লাপাড়ায় ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কৃষকদের সবজিক্ষেত পুড়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের গুয়াগাঁতী গ্রামের অন্ততঃ ১৫০বিঘা জমির বিভিন্ন সবজি পুড়ে গেছে। এ ব্যাপারে ওই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রে তাদের প্রায় ৭ লাখ টাকার সবজি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়ে গেছে বলে দাবি করেছেন। ইটভাটার মালিক শফিকুল ইসলাম শফি বলছেন, তার ইটভাটার গ্যাসে সবজি’র তেমন ক্ষতি হওয়ার কথা নেই। তার পরও অভিযোগকারী কৃষকদের সাথে তিনি কথা বলবেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গুয়াগাঁতী গ্রামের অর্ধশতাধিক কৃষকের স্বাক্ষর করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গুয়াগাঁতী মৌজায় পার্শ¦বর্তী অলিপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম শফির একটি নতুন ইট ভাটা রয়েছে। এই ইটভাটার চারপাশে তাদের গ্রামের অন্ততঃ ৩শ’ বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। এসব জমির মধ্যে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে তারা এ বছর পটল,মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া,ঢেড়শ,ঝিংগা,করলাসহ নানা ধরণের সবজি চাষ করেছিলেন। কিন্তু উক্ত শফিকুল ইসলামের ইটভাটা থেকে সৃষ্ট বিষাক্ত গ্যাসে ভাটার চারপাশে আধাকিলোমিটারেরও বেশি এলাকার সবজিক্ষেতগুলো পুড়ে গেছে। এতে বর্তমান বাজার মূল্যে তাদের প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অভিযোগকারী কৃষকেরা অবিলম্বে তাদের ফসলি মাঠ থেকে ইটভাটা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া এবং তাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী জানান, তিনি গুয়াগাঁতী গ্রামের মাঠে ইটভাটার গ্যাসে পুড়ে যাওয়া সবজি ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। আসলে প্রতিটি ইটভাটা থেকে যে গ্যাসের উৎপত্তি হয় তাতে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং কার্বন মনোঅক্সাইড থাকায় তা ফসলের প্রচুর ক্ষতি করে। প্রকৃতই ওই মাঠে প্রচুর সবজি গাছ পুড়ে গিয়ে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তিনি এই ক্ষতি পূরণের ব্যাপারে কৃষকদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ইটভাটা মালিক শফিকুল ইসলাম শফির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার ইটভাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স রয়েছে। কৃষকরা তাদের যে ক্ষতির কথা বলেছেন তা সঠিক নয়। তারপরও তিনি অভিযোগকারী কৃষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা সুলতানা গুয়াগাঁতী গ্রামের সবজি চাষিদের অভিযোগ পাবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিনি ইতোমধ্যেই পরিবেশ অধিদপ্তরের সিরাজগঞ্জ জেলা অফিসকে বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।