শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে সতের কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আঞ্চলিক সড়ক সংস্কার ও বর্ধিতকরণ কাজের শুরুতেই নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) কর্মকর্তাদের নিরবতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কটির সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানায়, উপজেলার সেরুয়া বাজার থেকে ব্র্যাক বটতলা হয়ে ভবানীপুর পর্যন্ত বারো কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কটি সংস্কার, বর্ধিত ও শক্তিশালীকরণ কাজ শুরু করা হয়েছে। গত ৭ মে এই কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কাজটি করছেন বরেন্দ্র এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজের শুরুতেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা মিয়া, মোস্তাফিজার রহমানসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, সড়কের কাজে এক নম্বর ইট ব্যবহার করার কথা থাকলেও তিন নম্বরসহ পুরনো ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
ফলে নবনির্মিত সড়কের বর্ধিত অংশ সংস্কার কাজের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। এছাড়া মালবাহী ট্রাক ও বাস যাতায়াত শুরু করলে দেবে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ জাহিদুল ইসলাম বলেন, সড়কটির সিংহভাগ অংশ আমার মির্জাপুর ইউনিয়নে। তাই কাজ পরিদর্শনে গিয়ে দেখি, কাজের মান নিম্নমানের। যেসব খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তা তিন নম্বর এবং পুরনো ইটের। যা দেখে এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার সরেজমিনে গেলে সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শেরপুর-রানীরহাট সড়ক সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় খোয়া ভাঙার কাজ করছেন বেশকয়েকজন শ্রমিক। যেসব ইট ভাঙা হচ্ছে, এর বেশির ভাগই তিন নম্বর ও পুরনো ইট। তাৎক্ষণিক সেগুলো সংমিশ্রন করে ড্রাম ট্রাকে তুলে সড়কে ফেলছেন তারা।
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক সবুজ মিয়া বলেন, সড়ক সংস্কার ও বর্ধিতকরণ কাজে কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। এছাড়া তিন নম্বর ও পুরনো ইটের খোয়া ব্যবহারের প্রশ্নই আসে না। এরপরও এই প্রতিবেদককে সরাসরি পরিচয় ও সাক্ষাতে কথা বলার আহবান জানিয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
এদিকে জানতে চাইলে কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবু হাসান প্রথমে সড়কটিতে নিম্নমানের বিষয়ে অস্বীকার করলেও খোয়া ও ইটের ছবি দেখে নিশ্চুপ বনে যান। সেই সঙ্গে নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণ করে ভালো মানের ইট-খোয়া ও বালু ব্যবহার করার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেবেন বলে দাবি করেন এই উপ-সহকারি প্রকৌশলী।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।