নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও হত্যা-চাঁদাবাজিসহ ২০ মামলার আসামি সাবেক এমপির সহযোগী-যুবলীগ কর্মী মো. রাশেদুল ইসলাম কোয়েলকে (৩৭) আদালতে নেওয়ার সময় ডিম ও মানুষের মল নিক্ষেপ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। একই সাথে তার বিচারের দাবিতে আদালতের বাইরে বিক্ষোভ-মিছিল করে তারা। পরে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে আদালত চত্ত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল থেকেই আদালত চত্ত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরে তাকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কড়া প্রহরায় জেলা কারাগার থেকে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রওশন আলমের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা ১০টি মামলায় হাজির করে ৭ থেকে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন।

এছাড়া কোয়েলকে আদালতে তোলার পর আরও ৫ থেকে ৬ টি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তারা গ্রেফতারের আবেদন করেন। পরে আদালত শুনানি শেষে গ্রেফতারের আবেদন মঞ্জুর করে তাকে নাটোর কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

সম্প্রতি ভারতে পালানোর সময় যুবলীগ কর্মী মো. রাশেদুল ইসলাম কোয়েলকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত থেকে বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা আটক করেন। পরে জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আসামি রাশেদুল ইসলাম কোয়েল সদর উপজেলার চকবৈদ্যনাথ মহল্লার আমিনুল ইসলামের ছেলে। তিনি নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা)  আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।

নাটোর কোর্ট ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) মো. মোস্তফা কামাল জানান, গত শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলা সীমান্তের ৮৪/৫-এস সীমানা পিলার দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পাড়ি জমানোর সময় কোয়েলসহ তিনজনকে বিজিবি সদস্যরা আটক করেন।

এরপর তাদের বিজিবির কুষ্টিয়া সদর দপ্তরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দৌলতপুর থানায় সোপর্দ করা হয়। আটক ব্যক্তিদের অপরাধের প্রোফাইল এবং সংবেদনশীলতা বিবেচনায় নাটোর জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম প্রিজন ভ্যানে দৌলতপুর থানা থেকে রাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের নাটোরে নিয়ে আসেন। আটককৃতদের মধ্যে রাশেদুলের নামে হত্যা, নাশকতাসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।

রেজাউলের নামে মাদক, মোটরসাইকেল চুরি, চাঁদাবাজিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নাশকতা ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগেও আলাদা মামলা রয়েছে।

তিনি বলেন, দুপুরে রাশেদুল ইসলাম কোয়েলকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কড়া প্রহরায় জেলা কারাগার থেকে নাটোরের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রওশন আলমের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় পুলিশ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যার অভিযোগে দায়ের করা ১০টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

এসময় সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা ৭ থেকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তার নামে হত্যা, নাশকতাসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। তবে আদালতে নেয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া প্রহরার মধ্যেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় তাকে কিল ঘুষি মারাসহ ডিম ও মল নিক্ষেপ করা হয়।