সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় পানি কমেছে ২৯ সেন্টিমিটার। উপজেলার শিমুলতাইড় গ্রামে বেড়েছে ভাঙন। ইছামারা গ্রামের ৪০০ মিটার এলাকাজুড়ে ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ বিঘা কৃষিজমি যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। বাড়াছে বাঙালি নদীর পানিও।
উপজেলার যমুনা নদীতে আজ রোববার (২৩ জুন) থেকেই পানি কমতে শুরু করেছে। গতকাল শনিবার এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৫.২৬ মিটার। আজ রোববার (২৩ জুন) বিকাল ৩ টায় পানির উচ্চতা হয়েছে ১৪.৯৭ মিটার। আজ রোববার (২৩ জুন) বিকাল ৩ টা পর্যন্ত এ নদীর পানি ২৯ সেন্টিমিটার কমেছে।
এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। আজ রোববার (২৩ জুন) বিকেল ৩টা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ১ মিটার ২৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে যমুনা নদীর পানি কমলেও বাড়ছে বাঙালি নদীর পানি।
গতকাল শনিবার বাঙালি নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৬৩ মিটার। আজ রোববার (২৩ জুন) এ নদীর পানির উচ্চতা হয়েছে ১৩.৮৪ মিটার। এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫.৪০ মিটার। বাঙালি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ১ মিটার ৭৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে যমুনা নদীর পানি কমার সাথে সাথে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলতাইড় গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এ গ্রামের বেশকিছু বাসিন্দা এখন এ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন। এদিকে কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গোদাখালী গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন বেশ প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এখানে প্রায় ৪০০ মিটার এলাকাজুড়ে ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ এলাকার ৫০ বিঘার বেশি কৃষিজমি যমুনাগর্ভে চলে গেছে। এখানে তীর সংরক্ষণ কাজের প্রায় ২০ মিটার এলাকার জিও ব্যাগও ধ্বসে গেছে। এতে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে ইছামারা গোদাখালি এলাকার ৩০০ টির বেশি পরিবার। হুমকিতে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধও। এছাড়া মানিকদাইড় গ্রামের উত্তর পার্শ্বে জামালপুর মাদারগঞ্জ সীমানায় যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এদিকে উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া গ্রামের যেখানে বাম তীর সংরক্ষণের কাজ হচ্ছে তার উত্তর পাশে বেশ কিছু এলাকাজুড়ে ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে এখনো কোনও কাজ শুরু করা হয়নি। বোহাইল ইউনিয়নের শংকরপুর চরে যমুনা নদীর ভাঙন এখনো অব্যাহত আছে। সেখানে কয়েকদিনে যমুনা নদীর ভাঙনে বেশ কিছু কৃষিজমি ভেঙে গেছে।
কামালপুর ইছামারা গ্রামের ইউপির সদস্য আজাহার আলী বলেন, গত ২ দিন ধরে ইছামারা গ্রামের যেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীতীর সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে, তার ভাটিতে যমুনা নদীর ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে গত কয়েকদিনে ৫০ বিঘার বেশি কৃষিজমি যমুনায় বিলীন হয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে ইছামারা গ্রামের কয়েকশত পরিবার গ্রামছাড়া হয়ে যাবে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যেই কামালপুর ইছামারা গ্রামের যমুনা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। সেখানে নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে খুব শিঘ্রই সেখানে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।