পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে অতি ভারি বর্ষণে রিং কালভার্টের পাশে একটি সড়ক ভেঙে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। গতকাল রোববার ভোরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া-দেওয়ানহাট-জগদল আঞ্চলিক সড়কের বলেয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কারণে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যানবাহনগুলোকে জেলা শহরে আসতে হচ্ছে। এদিকে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর অতি ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে গতকাল রোববার বৃষ্টিপাত কমে গেলে কিছু কিছু এলাকা থেকে পানি সরে যেতে শুরু করেছে।
সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, বলেয়াপাড়া হয়ে দেওয়ানহাট-জগদল যাওয়ার পাকা সড়কটি প্রতিদিন প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। গত শনিবার রাতের অতিবৃষ্টিতে বলেয়াপাড়া গ্রামের একটি কার্লভার্টের পাশের মাটি সরে গিয়ে সড়কটি ভেঙ্গে যায়। এতে করে ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। তিনি আরও জানান, পঞ্চগড়-হাড়িভাসা সড়কের বানিয়ার মিল সংলগ্ন ভাঙ্গামালি ব্রিজের ভাটি অংশে স্থায়ীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করায় সেখানে দিয়ে পানি প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সেই পানির চাপ বেড়েছে বলেয়াপাড়া দিয়ে।
গত বর্ষা মৌসুমেও এই ব্রিজের মূখ বন্ধ থাকায় পৌর এলাকার হঠাৎপাড়া ও সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়ায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল। সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল হক ও পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করে একটি দেয়াল ভেঙে পানি সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। সেই সাথে দ্রুত পানি সরে যাওয়ার জন্য বলেয়াপাড়ায় সড়কের ওপর রিং কার্লভার্ট ভেঙে সেখানে বক্স কালভার্ট এবং পঞ্চগড়-হাড়িভাসা সড়কের পাশ দিয়ে বড় ড্রেন নির্মাণ করে পানি পার্শ্ববর্তি তালমা নদীতে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু এলজিইডি যে এলাকা দিয়ে পানি চাপ বেশি সেখানে রিং কালভার্ট ভেঙে বক্স কার্লভার্ট না করে সেখানে থেকে অনেকটা দূরে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করে। যার কোন প্রয়োজনই ছিল না। আর সড়কের ধার দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করে পানি তালমা নদীতে ফেলার কোন উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে কথা বললে এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী রমজান আলী জানান, খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। রিং কালভার্ট থাকায় সেখান দিয়ে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে পানির চাপে সড়কটি ভেঙে গেছে। আসছে অর্থবছরে সেখানে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। আপাতত বর্ষা মৌসুমে সেখানে কাঠ বা বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। আগামী অর্থ বছরে সেখানে একটি বড় বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে বলে আমাকে জানিয়েছেন। যানবাহন ও মানুষ চলাচলের যেন কোন সমস্যা না হয় সেজন্য সেখানে একটি সাঁকো নির্মাণের ব্যবস্থা নিতে ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত সেখানে সাঁকো নির্মাণ করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।