ভিডিও

নাগালের বাইরে ইলিশ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৯:৫০ রাত
আপডেট: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ০৯:৫০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

পদ্মা, মেঘনা, বঙ্গোপসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। কিন্তু বাড়তি উৎপাদনের পরও ইলিশের দাম কমছে না। ফলে প্রতিবারের মতো এবারও ইলিশ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে। দাম বাড়তির কারণ হিসেবে আড়তদাররা নানা বাহানা করছেন। তাদের বক্তব্য, দুর্গাপূজা চলছে, পূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে। যা আদৌ সত্য নয়।

আবার বলছে ২২ দিন পদ্মা-মেঘনায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ- তাই মূল্য বৃদ্ধি। তাদের এ বাহানাও সত্য নয়। কারণ সারা বছরই ইলিশ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থাকে। সাধারণত এক কেজি ইলিশের দাম ১৮০০-২০০০ টাকা। ছোট জাটকা ইলিশ ৭০০-১০০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তাই মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্তের কপালে ইলিশ জোটে না কখনই। কিন্তু বাজারে ইলিশ সরবরাহের কমতি নেই কখনও।

এদিকে মা ইলিশ রক্ষায় বিজ্ঞান ভিত্তিক সময় বিবেচনা করে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে ১২ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ সহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহণ, ্ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে এবং একই সঙ্গে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রতি বছর এই সময় মা ইলিশ ডিম ছাড়ার লক্ষ্যে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ছুটে আসে। এই সময়কে বিবেচনা করে এ বছরও ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবেন না।

নিষেধাজ্ঞার সময়ে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে। এদিকে, নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে জেলেরা। জেলেদের সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার দাবি জানান জেলেরা।

পত্র-পত্রিকার খবরে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৫ দশমিক ৭১ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে ইলিশের আহরণ। ইলিশ এখন শুধু আমাদের জাতীয় সম্পদই নয়, ইলিশ এখন রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মৎস্য সম্পদের অবদান এখন ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। আশার কথা, প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম থেকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে।

আমরা মনে করি, এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সাফল্য লাভ করলেও বাজারে মাছের লাগাম ছাড়া দাম। স্বাভাবিক নিয়মে মাছের উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কমার কথা। অথচ বাজারে উল্টো চিত্রই চোখে পড়ে। নদী-জলাশয়ে খালে-বিলে প্রাকৃতিক মাছ কমে যাওয়ায় এখন অধিক মাত্রায় মাছের চাষ হচ্ছে। এর ফলে মাছের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, পাশাপাশি কর্মসংস্থানও হচ্ছে।

ইলিশ নিয়ে সাধারণ মানুষের আক্ষেপ আমরা উপলব্ধি করি। আমরা মনে করি, দেশের মানুষের কথা আগে, ইলিশ রফতানির কথা পরে। দেশের মানুষের কাছে ইলিশ সুলভ করতে হবে। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপই কেবল পারে ইলিশ উৎপাদনে আরও সমৃদ্ধি লাভ করতে। দেশের মানুষের কাছে ইলিশ সুলভ করতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS